মঙ্গলবার কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বাইসারনে জঙ্গি হামলার পরপরই জানা গিয়েছিল পর্যটকদের ভিড়ে মিশে থাকা জঙ্গিদের গুলিতে আহত হয়েছেন ১২ জন। কিন্তু সময় গড়াতেই বাড়ল মৃত্যু আশঙ্কা। এখনওপর্য়ন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ২৭ জনের মৃত্যু আশঙ্কা করা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে কমপক্ষে ১০ জন জঙ্গি সেনাবাহিনীর পোশাক পরে এসে বেছে বেছে গুলি চালায়।
যে কাশ্মীরে এত নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি বলে শোনা যায় সেখানে কী ভাবে এমন হামলা চালানো সম্ভব হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জানা যাচ্ছে পাকিস্তানের কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী ওই হামলার পেছনে রয়েছে। তবে তার থেকেও বড় বিষয় হল পর্যটকদের নাম জিজ্ঞাসা করে, তাদের ধর্ম পরিচয় যাচাই করে গুলি করা হয়েছে। এমনটাই বলছেন এক মহিলা পর্যটক। জঙ্গিরা তার স্বামীকে গুলি করে মেরেছে।
প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে রয়েছেন সৌদি আরবে। সেখান থেকে তিনি ভিডিয়ো কন্ফারেন্সে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর নির্দেশে অমিত শাহ ইতিমধ্যেই কাশ্মীরে গিয়ে পৌঁছেছেন। ঘটনার পরপরই একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ওই মহিলার স্বামীকে গুলি করে মেরেছে জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ওই মহিলা বলছেন, এখানে দাঁড়িয়ে ভেলপুরী খাচ্ছিলাম। পাশেই ছিল আমার স্বামী। একজন এসে ওকে গুলি করে দিল। ও বলল, মনে হয়ে ও মুসলিম নয়।
ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে অন্য এক মহিলা চিত্কার করছেন, আমরা স্বামীকে বাঁচান। অন্য একজন পুরুষকে রক্তাক্ত অবস্থায় চেয়ারে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। পাশে শোনা যাচ্ছে, আমার স্বামীকে বাঁচান। একজন ওই আহত ব্যক্তিকে বলছেন, আপনি একটু জল খান। শান্ত হোন। কিছু হবে না। এক মহিলাকে তাঁর স্বামীর মৃতদেহের পাশে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে।
কর্ণাটকের শিবমোগা থেকে পহেলগাঁও গিয়েছিলেন মঞ্জুনাথ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর সঙ্গে কাশ্মীরে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী পল্লবী ও সন্তান। ভয়ংকর ওই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে পল্লবী বলেছেন, আমার স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে কাশ্মীর গিয়েছিলাম। দুপুর প্রায় দেড়টা হবে মনে হয়। আমরা ছিলাম পহেলগাঁওয়ে। আমার চোখের সামনে আমার স্বামীরে গুলি করে মেরে ফেলল। এখনও ভয়ংকর স্বপ্নের মত লাগছে সবকিছু। এলাকার মানুষ আমাদের উদ্ধার করে।
পল্লবীর দাবি, হামলাকারীরা মনে হয় শুধু হিন্দুদেরই টার্গেট করেছিল। তিন থেকে চার জন আমাদের উপরে হামলা করে। আমি বললাম আমাকেও মেরে ফেল। ওদের একজন বলল আমরা আমরা তোমাকে মারব না। যাও মোদীকে গিয়ে খবর দাও। কী করে স্বামীর দেহ নিয়ে যাব জানি না। এয়ার লিফট ছাড়া সম্ভব নয়।
হামলার পরপরই ঘটনা তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক্স হ্যান্ডেলে করা এক পোস্টে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, যারা এই ঘটনার পেছনে রয়েছে তারা ছাড় পাবে না। তাদের নোংরা পরিকল্পনা সফল হবে না। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ের সংকল্প দুর্বল হবে না।