কাশ্মীর সমস্যার দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। না হলে এর পর মধ্যস্থতারও সময় পাওয়া যাবে না। সিঙ্গাপুরের সাংগ্রিলা বৈঠক থেকে এমনটাই দাবি করলেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর শীর্ষকর্তা জেনারেল শাহিদ সমশাদ মির্জ়া। তিনি জানিয়েছেন, যে কোনও সমস্যা তৈরি হলে তার সম্পূর্ণ সমাধানই একমাত্র কাম্য। তাৎক্ষণিক ভাবে কোনও ব্যবস্থা করলে সংঘাত পিছিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু এড়ানো যায় না। ভারত-পাকিস্তানের মূল সমস্যা কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নীতি মেনে এই কাশ্মীর সমস্যারও সম্পূর্ণ সমাধান দরকার বলে দাবি করেছেন তিনি। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জেনারেল মির্জার এই বক্তব্য প্রকাশ করেছে।
সাংগ্রিলা বৈঠকে শনিবার ‘আঞ্চলিক সঙ্কট ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন পাক সেনাকর্তা। তিনি বলেন, ‘‘দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনা নয়, দ্বন্দ্বের সমাধান এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। একমাত্র তাতেই স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।’’ কাশ্মীরের প্রসঙ্গ তুলে এর পর তিনি দাবি করেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম মেনে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের ইচ্ছা অনুযায়ী ওই সমস্যার সমাধান করতে হবে। তবেই দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ফিরবে। জেনারেল মির্জ়ার কথায়, ‘‘ভারতের চরমপন্থী রাজনীতিতে সঙ্কট সামাল দেওয়ার (ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট) কোনও ব্যবস্থা নেই। আগামী দিনে বিশ্বশক্তিগুলি সঙ্কটে হস্তক্ষেপ বা মধ্যস্থতার সময় না-ও পেতে পারে। তখন অনেক দেরি হয়ে যাবে। ক্ষয়ক্ষতি বা ধ্বংসলীলা তখন আর এড়ানো যাবে না।’
পাক সেনাকর্তার পাশাপাশি সাংগ্রিলা বৈঠকে বক্তা হিসাবে ছিলেন ভারত, কানাডা, ফিজির সেনাবাহিনীর শীর্ষ আধিকারিক। ভারতের তরফে আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন সেনা সর্বাধিনায়ক (চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বা সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছিল ভারত। পাকিস্তানে প্রত্যাঘাতের সেনা অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে দেয় ভারতীয় সেনা। পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়। দুই দেশের মধ্যে টানা চার দিন সংঘাত চলেছে। গত ১০ মে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। এই সংঘর্ষবিরতির কথা সমাজমাধ্যমে প্রথম প্রকাশ করেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরবর্তী কালে তিনি একাধিক বার দাবি করেছেন, আমেরিকার মধ্যস্থতাতেই এই সংঘর্ষবিরতি সম্ভব হয়েছে। পাক সেনাকর্তা সেই মার্কিন মধ্যস্থতার প্রসঙ্গ টেনে এ বার দাবি করলেন, কাশ্মীর সমস্যার দ্রুত সমাধান না-হলে এর পর আর মধ্যস্থতার সময় কেউ পাবে না।