শুক্রবার আট বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটতে পারে করুণ নায়ারের। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লিডস টেস্টের দলে সুযোগ পেলে আট বছর পর আবার তাঁকে দেখা যাবে দেশের জার্সিতে।
অপেক্ষার অবসান হোক বা না হোক, ২০১৮ সালের ইংল্যান্ড সফরের কথা ভুলতে পারছেন না করুণ। বিশেষ করে তৎকালীন অধিনায়ক বিরাট কোহলি এবং কোচ রবি শাস্ত্রীর উপেক্ষা এখনও দগদগে ঘায়ের মতো রয়েছে করুণের জীবনে।
সেটিও ছিল ইংল্যান্ড সফর। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ়ের পুরোটাই বেঞ্চে বসে কাটাতে হয়েছিল করুণকে। পঞ্চম টেস্টে তাঁর খেলার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু কোহলি-শাস্ত্রীরা ভারত থেকে হনুমা বিহারীকে নিয়ে এসেছিলেন। অথচ, বিহারী মূল দলে ছিলেন না। করুণের বদলে তাঁকেই খেলানো হয়।
এ বার ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে সেই অবহেলা নিয়ে মুখ খুলেছেন করুণ। ‘মেল স্পোর্টস’-কে তিনি বলেন, ‘‘তখন মনে হচ্ছিল কেউ আমাকে মাটিতে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে এবং আমি বুঝে উঠতে পারছি না কোথায় যাব।’’ শেষ পর্যন্ত কেনাকাটা করতে বেরিয়ে পড়েছিলেন করুণ। বলেন, ‘‘সুযোগ না পাওয়ার খবরটা যখন আমার কানে এসে পৌঁছোয়, আমি বুঝতে পারছিলাম না কী করব, কার সঙ্গে কথা বলব। ঠিক করলাম হেঁটে অক্সফোর্ড স্ট্রিটে যাব। যা পছন্দ হবে তা-ই কিনব। সব কিছু কিনব। দামি জিনিস কিনতে হবে, আমি কখনওই এরকম নই। কিন্তু আমার মনে হল, এমন কিছু ঘটার জন্য কেন অপেক্ষা করছি, যার উপর আমার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।’’
শেষ পর্যন্ত কী কিনেছিলেন তা-ও জানিয়েছেন করুণ, ‘‘লুই ভিটনের জুতো কিনেছিলাম। মনে হয়েছিল, এটা তো আমি কিনতেই পারি। আগে কখনও এরকম করিনি। আমার কাছে টাকাটা কোনও দিনই গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। আমার একটাই লক্ষ্য ছিল, ভারতের হয়ে খেলা। কিন্তু সেই সময় আমার নিজেকে একটু খুশি করার দরকার ছিল। মনে হয়েছিল, কেনাকাটা করলেই আমার মন ভাল হয়ে যাবে। বোকার মতো ভেবেছিলাম। তখনও একটা টেস্ট বাকি ছিল। কিন্তু আমার কাছে সফর ওখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। বাকি দিনগুলোর প্রত্যেকটা আমার জন্য খুব নিষ্ঠুর ছিল। এর পর আমাকে আর দলে নেওয়া হয়নি।’
সাত বছর পর করুণ আবার দেশের হয়ে ইংল্যান্ড সফরে। এর মাঝে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেট হোক বা ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেট, তিনি প্রচুর রান করে আবার জাতীয় দলে ফিরে এসেছেন। তাঁর প্রশংসা করেছেন ভারতীয় দলের এখনকার কোচ গৌতম গম্ভীর। বলেছেন, ‘‘রান থাকুক বা না থাকুক, আসল হল কখনও হার না মানা মনোভাব। এটাই করুণকে আবার জাতীয় দলে জায়গা করে দিয়েছে। এটা সকলের কাছে অনুপ্রেরণা।’’