জাপানে ‘মহাকম্প’-এর আশঙ্কা! প্রাণ হারাতে পারেন প্রায় তিন লক্ষ, ১০ ফুট জলোচ্ছাসের সম্ভাবনা, বলছে সরকারি রিপোর্ট

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে মায়ানমার। প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশী তাইল্যান্ডে। এই পরিস্থিতিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে জাপান! সে দেশের সরকারের প্রকাশিত একটি রিপোর্ট বলছে, নানকাই ভূতাত্ত্বিক খাত বরাবর ‘মহাকম্প’ হয়ে কাঁপতে পারে জাপান। রিখটার স্কেলে সেই কম্পনের মাত্রা হতে পারে ৯। ওই বিপর্যয়ে প্রাণ হারাতে পারেন দু’লক্ষ ৯৮ হাজার জন। প্রসঙ্গত, কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৮ ছাড়ালে তারে ‘মহাকম্প’ বলা হয়।

২০১২-১৩ সালেও এই সম্ভাব্য ‘মহাকম্প’ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল জাপানের সরকার। তখন সম্ভাব্য মৃত্যু সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞেরা তখন আশঙ্কা করেছিলেন যে, জাপানে ‘মহাকম্প’ হলে তাতে প্রাণ হারাতে পারেন তিন লক্ষ ২৩ হাজার জন। বর্তমান পরিস্থিতিতে পর্যালোচনা করে জাপান সরকার মনে করছে, সেই মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমাতে তারা সমর্থ হবে। প্রযুক্তি এবং আগে থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা করেই একমাত্র এটা সম্ভব। তাদের লক্ষ্য, ‘মহাকম্প’ হলে এই মৃত্যুর সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমানো। বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনাও ৫০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে তারা।

নানকাই ভূতাত্ত্বিক খাতের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮০০ কিলোমিটার। টোকিয়োর পশ্চিমে শিজ়ুয়োকা থেকে দক্ষিণে কিয়ুশু দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে সেটি। এই খাত আসলে দু’টি টেকটনিক পাতের সংযোগস্থল। জাপান যে পাতের উপর রয়েছে, ক্রমে তার নীচে প্রবেশ করছে ফিলিপাইন সাগর টেকটনিক পাত। এই দুই পাত নড়াচড়া করলে তাদের সংঘর্ষের ফলে বিশাল শক্তি উদ্গত হবে। তার জেরে হতে পারে ‘মহাকম্প’। এর ফলে সুনামি আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে ঢেউয়ের উচ্চতা হবে ১০ ফুট। সংবাদ সংস্থাগুলি দাবি করেছে, ওই সুনামির ফলে দু’লক্ষ ১৫ হাজার মানুষ মারা যেতে পারেন। ৭৩ হাজার বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে। জাপানের আর্থিক ক্ষতি হতে পারে প্রায় ১৮ হাজার কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় এক কোটি কোটি টাকা।

গত ১,৪০০ বছর ধরে এই নানকাই খাতে প্রায় প্রতি ১০০ থেকে ২০০ বছর অন্তর ‘মহাকম্প’ হচ্ছে। শেষ বার হয়েছিল ১৯৪৬ সালে। তখন রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৮.১। তাতে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ১,৪০০ জনের। জানুয়ারিতে জাপানের একটি সরকারি প্যানেল জানায়, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে আবার সেখানে হতে পারে ‘মহাকম্প’। ৭৫ থেকে ৮২ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে কত ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে, সেই নিয়েই সম্ভাব্য হিসেব কষে রিপোর্ট দিয়েছে সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.