যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল রাজভবন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিয়েছেন রাজভবনে। যাদবপুরকাণ্ডের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপর চাপ আরও বৃদ্ধি করতে শুরু করেছেন পড়ুয়ারাও। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম এবং অতিবাম সংগঠনগুলি মিলিত ভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা করে। শুক্রবার দুপুর ৩টে নাগাদ একটি নাগরিক মিছিলের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গোলপার্ক হয়ে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ফিরবে ওই মিছিল।
পাশাপাশি দাবিদাওয়া পূরণের জন্য সোমবার দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দিয়েছেন পড়ুয়ারা। ওই সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্জ়িকিউটিভ কাউন্সিল (ইসি)-কে বৈঠকে বসতে হবে। ইসি বৈঠকে সদর্থক পদক্ষেপ করা না-হলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগকে স্তব্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পড়ুয়ারা। অরবিন্দ ভবনে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারের অফিস-সহ বিভিন্ন দফতর ওই দিন বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তবে পড়ুয়াদের যাতে কোনও অসুবিধা না-হয়, তা বিবেচনা করে ‘কন্ট্রোলার অফ এগ্জ়ামিনেশন’ অফিস এবং বৃত্তি বিভাগ (স্কলারশিপ সেকশন)-কে এর আওতায় রাখা হচ্ছে না।
গত শনিবার যাদবপুরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান একদল পড়ুয়া। হামলা হয় মন্ত্রীর গাড়িতে। তাতে আহত হন ব্রাত্য। আবার পড়ুয়াদের অভিযোগ, মন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছেন এক ছাত্র। ওই ঘটনার রাতে আহতদের হাসপাতালে দেখতে গিয়ে আক্রান্ত হন যাদবপুরের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। তাঁর পরনের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার ছ’দিনের মাথায় অবশেষে যাদবপুরকাণ্ডের রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, যাদবপুরকাণ্ডে একটি পৃথক অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছেন রাজ্যপাল। ওই কমিটিরও রাজভবনে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। রাজভবন সূত্রে খবর, শুক্রবার বিকেলে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছেন বোস। ভার্চুয়ালি ওই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
শনিবারের ঘটনায় আহত পড়ুয়া ইন্দ্রানুজ রায় যাদবপুর থানায় একটি অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেটি গ্রহণ করেছে পুলিশ। অভিযোগপত্রে ব্রাত্যের নাম রয়েছে বলে সূত্রের খবর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাম এবং অতিবাম ছাত্র সংগঠনগুলির সাংবাদিক বৈঠকে উঠে আসে সেই প্রসঙ্গও। পড়ুয়াদের বক্তব্য, ইন্দ্রানুজ ব্যক্তিগত ভাবে সেই অভিযোগটি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও এই অভিযোগটি তুলে ধরতে হবে।