১৬ বার সূর্যোদয়, ১৬ বার সূর্যাস্ত দেখছি: মোদীকে শুভাংশু, কেন এত বার দিন-রাত হয় আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে?

ভারতীয় সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবারই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছেন শুভাংশু শুক্লরা। শনিবার তাঁর সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে কথোপকথনে ভারতীয় নভশ্চর জানান, আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টায় ১৬ বার সূর্যোদয় এবং ১৬ সূর্যাস্ত দেখছেন তাঁরা।

শনিবার বিকেলে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) মোদীর সঙ্গে কথা হয় শুভাংশুর। মহাকাশ থেকে তাঁরা কী কী দেখলেন, তা-ই জানতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। জবাবে শুভাংশ বলেন, ‘‘কিছু ক্ষণ আগেই জানলা দিয়ে যখন তাকালাম, দেখলাম আমরা হাওয়াইয়ের (আমেরিকার একটি রাজ্য) উপর রয়েছি। আমরা এখানে দিনে ১৬ বার সূর্যোদয় এবং ১৬ বার সূর্যাস্ত দেখছি।’’

আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে ১৬ বার সূর্যোদয় এবং ১৬ বার সূর্যাস্ত প্রত্যক্ষ করার কথা এর আগে মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামসও বলেছিলেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টায় এত বার দিন-রাত হয় সেখানে? বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন পৃথিবীর চারপাশে ঘণ্টায় ২৮ হাজার কিলোমিটার বেগে ঘোরে। পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করতে ৯০ মিনিট সময় লাগে তার। সেই কারণেই প্রতি ৪৫ মিনিট অন্তর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দিন-রাত হয়।

মহাকাশ থেকে ভারতকে কেমন দেখতে লাগে, মোদীকে তা-ও জানিয়েছেন শুভাংশু। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম বার যখন মহাকাশ থেকে গোটা পৃথিবীকে দেখলাম, কোনও সীমান্ত দেখতে পেলাম না। মানে সেখানে কোনও দেশ নেই। কোনও মহাদেশও নেই। আর প্রথম বার যখন ভারতকে দেখলাম, ভীষণ বড় মনে হল। ম্যাপে যতটা বড় দেখায়, তার চেয়ে অনেক বড়।’’

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে এই মুহূর্তে ১১ জন নভশ্চর রয়েছেন। সকলেই নানাবিধ গবেষণামূলক কাজে ব্যস্ত। ‘এক্সপিডিশন ৭৩’-এর সাত জন ক্রু সদস্য আগে থেকেই মহাকাশ স্টেশনে ছিলেন। তাঁরা শুভাংশু-সহ ‘অ্যাক্স-৪’-এর চার নভশ্চরকে অরবিটাল ল্যাব সিস্টেমের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করছেন। আগামী দু’সপ্তাহ ধরে মাইক্রোগ্র্যাভিটি সংক্রান্ত গবেষণা চলবে। সে জন্য নবাগত চার নভশ্চরকে প্রস্তুত হতেও সাহায্য করছেন তাঁরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্পেসএক্সের ‘ড্রাগন’ মহাকাশযানের ‘হ্যাচ’ খুলতেই বেরিয়ে আসেন প্রবীণ নভশ্চর তথা ‘অ্যাক্স-৪’ অভিযানের কমান্ডার পেগি হুইটসন। প্রথমে মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করেন তিনিই। এর পর একে একে বেরিয়ে আসেন পাইলট শুভাংশু শুক্ল, স্লায়োস উজ়নানস্কি-উইসনিউস্কি এবং টিবর কাপু। শুক্রবার শুরু হয় ড্রাগনের ভিতর থেকে পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা, যন্ত্রপাতি এবং পোর্টেবল সায়েন্স ফ্রিজ়ার নামানোর কাজ। এর পর ‘এক্সপিডিশন ৭৩’-এর সদস্যেদের কাছ থেকে অরবিটাল আউটপোস্টে কোনও রকম আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তাঁদের দায়িত্ব এবং মিশন নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে যোগাযোগের পদ্ধতি সম্পর্কে বিশদ জেনে নেন শুভাংশুরা। এর মাঝেই নিজেদের গবেষণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ‘এক্সপিডিশন ৭৩’-এর সাত সদস্য। কাজ শুরু করে দিয়েছেন শুভাংশুরাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.