‘পরিস্থিতি মেরামত করার সময় এসেছে’! ট্রাম্প অস্ত্র-সাহায্য বন্ধ করতেই বিতণ্ডা নিয়ে ‘অনুতপ্ত’ জ়েলেনস্কি

হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বেনজির তর্কাতর্কির ঘটনায় ‘অনুতপ্ত’ ভলোদিমির জ়েলেনস্কি! ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট দুঃখপ্রকাশ করে জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক যে ভাবে হওয়া উচিত ছিল, সেই ভাবে হয়নি। মঙ্গলবারই ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য বন্ধের ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্পের। তার পরই জ়েলেনস্কি তাঁর সমাজমাধ্যমের পোস্টে দুঃখপ্রকাশ করলেন। তবে কি আমেরিকার সহয়তা বন্ধ হওয়ায় চাপে পড়লেন জ়েলেনস্কি? উঠছে প্রশ্ন।

ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট শুধু দুঃখপ্রকাশই করেননি, তিনি আশাবাদী ‘বিষয়গুলি ঠিক করার’ ব্যাপারে। এখানেই থামেমনি জ়েলেনস্কি। ভবিষ্যতে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতি করারও ইঙ্গিত দিলেন তিনি। তাঁর আশা, সহযোগিতা এবং যোগাযোগ উন্নত হবেই! পোস্টে জ়েলেনস্কি লেখেন, ‘‘শুক্রবার হোয়াইট হাউসে আমাদের (ট্রাম্প-জ়েলেনস্কি) বৈঠক যে ভাবে হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। যা ঘটেছে, তা খুবই দুঃখজনক। সময় এসেছে পরিস্থিতি ঠিক করার।’’

ট্রাম্প-জ়েলেনস্কির বাদানুবাদের পর আমেরিকার সঙ্গে ইউক্রেনের খনিজ বণ্টন চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জ়েলেনস্কি সেই চুক্তি নিয়ে নিজের মত জানালেন। তিনি জানান, চুক্তি স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত। তাঁর দাবি, ইউক্রেন যে কোনও সময় এবং সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষর করতে চান। উল্লেখ্য, আমেরিকা এবং ইউক্রেনের মধ্যে বিশেষ খনিজ চুক্তি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই আলোচনায় রয়েছে। জ়েলেনস্কিই এই চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতে বিশেষ আগ্রহী ছিলেন ট্রাম্প। ইউক্রেনে কিছু বিরল খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়। সেই খনির দিকে আমেরিকার নজর রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, বিনা বাধায় সেই খনি ব্যবহারের অনুমতি পাওয়ার কথা ছিল আমেরিকার। ট্রাম্প সেই কারণেই এই চুক্তিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমেরিকাকে বিরল খনিজ ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে তাঁর বদলে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন জ়েলেনস্কি। হোয়াইট হাইসের বৈঠকে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা ছিল। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বা ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়ে আপস না-করা নিয়ে জ়েলেনস্কি অনড় থাকায় বিবাদের সূত্রপাত হয়। ফলে চুক্তি স্বাক্ষর না করেই হোয়াইট হাউস ছাড়েন জ়েলেনস্কি। তবে মঙ্গলবার তিনি স্পষ্ট জানান, নিরাপত্তার বিষয় নিশ্চিত হলেই চুক্তি স্বাক্ষর করবেন।

শুধু তা-ই নয়, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করার প্রস্তাবও দিলেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে আকাশ এবং জলপথে ‘যুদ্ধবিরতি’র আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘স্থায়ী শান্তি ফেরাতে যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার টেবিলে বসার জন্য প্রস্তুত। আমাদের থেকে বেশি শান্তি আর কেউ চান না। স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বেও কাজ করতে প্রস্তুত আমি এবং আমার দল।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.