গাজ়ায় ২৪ ঘণ্টায় ৮১ জনকে মেরে ফেলল ইজ়রায়েল! নেই সংঘর্ষবিরতির কোনও আভাস, চলেই যাচ্ছে একতরফা হামলা

গাজ়ায় শীঘ্রই সংঘর্ষবিরতি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে গাজ়া ভূখণ্ডের বাস্তব পরিস্থিতিতে দৃশ্যত সেই আভাস এখনও মিলছে না। গাজ়ায় একতরফা ভাবে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। ইজ়রায়েলের আক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৮১ জন প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে সেখানে। জখম হয়েছেন আরও অন্তত ৪২২ জন। সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজ়িরা’কে এমনটাই জানিয়েছেন গাজ়ার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

ট্রাম্পের দাবি, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই গাজ়ায় সংঘর্ষবিরতি হয়ে যেতে পারে। তবে শনিবারও গাজ়ার দক্ষিণ প্রান্তে খান ইউনিস শহরে বোমাবর্ষণ হয়েছে। প্যালেস্টাইনি সাংবাদিক ইব্রাহিম কান্নান সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, খান ইউনিস শহরে বসতি এলাকায় বোমা পড়ার পরে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে আকাশে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম। ‘আল জাজ়িরা’ জানিয়েছে, শনিবার ইজ়রায়েলি হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত ১১ জন প্যালেস্টাইনিই গাজ়া শহর সংলগ্ন তুফা এলাকার বাসিন্দা। নিহতদের মধ্যে ‘ডাউন সিনড্রোমে’ আক্রান্ত এক কিশোরীও রয়েছে।

ইজ়রায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলিতে দাবি করা হচ্ছে, গাজ়ায় সংঘর্ষ থামানোর জন্য ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে চাপ দিতে শুরু করেছেন ট্রাম্প। তবে ইজ়রায়েল যে ভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে গাজ়ায়, তাতে সংঘর্ষবিরতির কোনও আভাস মিলছে না। সংঘর্ষবিরতি নিয়ে এখনও পর্যন্ত ইজ়রায়েলের তরফে প্রকাশ্যে সদর্থক কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি। তবে ঘটনাপরম্পরা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সূত্র সংবাদ সংস্থা ‘এপি’কে জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে ইজ়রায়েলের মন্ত্রী রন ডার্মা ওয়াশিংটনে যেতে পারেন। ওই সূত্রের দাবি, গাজ়ায় সংঘর্ষবিরতি, ইরান পরিস্থিতি এবং অন্য বিষয় নিয়ে তাঁর আলোচনা হতে পারে আমেরিকার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে।

বস্তুত, গত মার্চ মাসে ইজ়রায়েল সংঘর্ষবিরতি ভাঙার পর থেকে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে তাদের আলোচনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেই থেকে গাজ়া ভূখণ্ডে ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে যাচ্ছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। হামলায় মৃত্যু হচ্ছে সাধারণ গাজ়াবাসীরও। দীর্ঘ দিন অবরুদ্ধ থাকার কারণে গাজ়াবাসী এখন অধিকাংশই কর্মহীন। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয় অনেককেই। তাঁদের জন্যই ত্রাণশিবিরের ব্যবস্থা করেছে জিএইচএফ। কিন্তু গাজ়ায় যে ত্রাণশিবির চলছে, তা-ও মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ রাষ্ট্রপুঞ্জের। ত্রাণশিবিরে খাবার আনতে যেতেও আতঙ্কে ভুগছেন গাজ়াবাসী! যখন-তখন সেখানেও বোমাবর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে। শুক্রবারও গাজ়ায় গোলাবর্ষণে ৭২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.