আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের উপরে যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তার অধিকাংশই বেআইনি বলে জানিয়েছিল নিউ ইয়র্কের আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে প্রত্যাশিত ভাবেই বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। আবেদনের সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে এখানেও টানা হল ভারতের প্রসঙ্গ। ট্রাম্পের তরফে আইনজীবীরা জানালেন, ভারতের উপর আরোপিত শুল্ক ইউক্রেনে শান্তি ফেরানোর অন্যতম উপায়।
সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্প প্রশাসন যে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ‘‘সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (আইইইপিএ) প্রয়োগ করে ভারতের উপর শুল্ক চাপিয়েছেন। রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি পণ্য কেনার জন্য এই পদক্ষেপ। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে যে জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এর মাধ্যমে তার মোকাবিলা করছেন ট্রাম্প। এটা যুদ্ধদীর্ণ দেশটিতে শান্তি ফেরানোর গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।’’
উল্লেখ্য, গত ২৭ অগস্ট থেকে ভারতের পণ্যে ট্রাম্পের শুল্ক কার্যকর হয়েছে। ট্রাম্প প্রথমে ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। পরে জানানো হয়, রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার কারণে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসাবে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক ভারতের পণ্য থেকে নেওয়া হবে। অর্থাৎ, মোট শুল্কের পরিমাণ ৫০ শতাংশ। ট্রাম্পের দাবি, ভারত খনিজ তেল কেনার ফলে সেই টাকায় রাশিয়ার যুদ্ধ করতে সুবিধা হচ্ছে। এ ভাবে পরোক্ষে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাহায্য করছে নয়াদিল্লি। ট্রাম্পের এই দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারত জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম এবং জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে বাণিজ্য নীতি স্থির করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।
আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে শুল্ক নিয়ে যুক্তি দিতে গিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, শুল্কের কারণেই আমেরিকা ‘ধনী রাষ্ট্র’ হয়ে উঠেছে। শুল্ক বাদ দিলে আমেরিকা ‘গরিব রাষ্ট্রে’ পরিণত হবে। বলা হয়েছে, ‘‘এক বছর আগে আমেরিকা মৃত রাষ্ট্র ছিল। যে সমস্ত দেশ আমাদের হেনস্থা করে এসেছে, এখন তারাই কোটি কোটি ডলার দিচ্ছে। ফলে আমেরিকা এখন আবার শক্তিশালী, অর্থনৈতিক ভাবে স্থিতিশীল এবং সম্মাননীয় রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।’’
গত সপ্তাহে আমেরিকার আদালত জানিয়েছিল, জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। তার অধিকাংশই বেআইনি। তবে এখনই শুল্কে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি। ট্রাম্প প্রশাসনকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ের মধ্যে মামলাটি শীর্ষ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।