কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে এ বার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইরান। সে দেশের সশস্ত্র বাহিনী এই হামলার কথা স্বীকার করেছে। সোমবার রাতে (ভারতীয় সময়) কাতারের রাজধানী দোহায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়, দোহার আকাশে নাকি আলোর রেখা দেখা গিয়েছে।
রবিবার ভোরে (ভারতীয় সময়) ইরানের তিন পরমাণুঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল আমেরিকা। সেই হামলার পর থেকেই পশ্চিম দুনিয়ায় নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আমেরিকার হামলার পরই প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দেয় ইরান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিশানা করে ইরানের সামরিকবাহিনী হুঁশিয়ারি দেয়, “এই যুদ্ধের শুরুটা আপনি করে থাকতে পারেন, কিন্তু শেষটা আমরাই করব।” সেই হুঁশিয়ারির ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই কাতারের মার্কিন বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইরান।
কাতারের বর্তমান পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে দোহার ভারতীয় দূতাবাস। কাতারে বসবাসকারী ভারতীয়দের সতর্ক থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, সকলকে শান্ত থাকার এবং কাতার প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলার পরামর্শও দিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস। প্রয়োজন ছাড়া সে দেশে থাকা ভারতীয়দের বাড়ির বাইরে না বার হওয়ার কথা বলেছে তারা।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনী রেভলিউশনারি গার্ড জানিয়েছে, কাতারে আমেরিকার আল-উদেইদ বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে তারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। পরে এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাতারও। একই সঙ্গে এই হামলার নিন্দাও করা হয়েছে কাতারের তরফে। সে দেশের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি জানান, এই হামলা কাতারের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত। শুধু তা-ই নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জের বিধিনিষেধও লঙ্ঘন করেছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী। তবে ইরানের নিরাপত্তা বিষয়ক দফতর জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্যবস্তু কখনই কাতার বা তার নাগরিকেরা নয়। আল-উদেইদ বিমানঘাঁটি লোকালয় থেকে অনেক দূরেই। কাতারকে ‘বন্ধু’ বলেই অভিহিত করেছে ইরান।
গত রবিবারের হামলার পরই ইরান-ইজ়রায়েল সংঘর্ষে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা। যদিও পরে পেন্টাগন জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে সংঘাত আর বাড়াতে চায় না তারা। তবে মার্কিন বাহিনীর এই হামলার পর রবিবারই ইরানের রিভলিউশনারি গার্ড বুঝিয়ে দিয়েছিল, তারা প্রতিশোধ নেবে। পশ্চিম এশিয়ায় ছড়িয়ে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটির কথা উল্লেখ করে তারা এ-ও জানিয়েছিল, হামলাকারীদের (আমেরিকার) পালানোর পথ নেই। এ বার কাতারের বিমানঘাঁটিতে সরাসরি হামলা চালাল ইরান। যদিও কাতারের তরফে জানানো হয়েছে, এই হামলায় এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতি ঘটেনি। এ ছা়ড়াও, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে আগেই কাতার তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।