আইপিএলের সঙ্গে টক্কর দিতে তৈরি ইংল্যান্ডের দ্য হান্ড্রেড। ২২ গজে লড়াইয়ের আকর্ষণে না হলেও টাকার অঙ্কে অনেকটা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) মতোই লাভবান হতে চলেছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। দ্য হান্ড্রেডের ছ’টি দলের কৌশলগত অংশীদারির চুক্তি সম্পূর্ণ হয়েছে। সব চুক্তির পর মোট বিনিয়োগের পরিমাণ হতে পারে ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি। ভারতীয় মূল্যে ৫৭৮৮ কোটি টাকারও বেশি।
দ্য হান্ড্রেডের আটটি দলের মধ্যে ছ’টি দলের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। আইপিএলের বেশ কয়েকটি দলের মালিক বা তাঁদের সংস্থা বিপুল বিনিয়োগ করেছেন ইংল্যান্ডের ১০০ বলের ক্রিকেট প্রতিযোগিতায়। যে ছ’টি দলের চুক্তি সম্পূর্ণ হয়েছে সেগুলি হল লন্ডন স্পিরিট, বার্মিংহ্যাম ফিনিক্স, ম্যাঞ্চেস্টার অরিজিনালস, নর্দার্ন সুপারচার্জার্স, সাদার্ন ব্রেভ এবং ওয়েলস ফায়ার। চুক্তি বাকি রয়েছে ট্রেন্ট রকেটস এবং ওভাল ইনভিন্সিবলসের।
লন্ডন স্পিরিটের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনেছে টেক টাইটান্স। বার্মিংহ্যাম ফিনিক্সের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনেছে নাইটহেড ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট। ম্যাঞ্চেস্টার অরিজিনালসের ৭০ শতাংশ কিনে নিয়েছে কলকাতার শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েন্কার সংস্থা আরপিএসজি গোষ্ঠী। আইপিএল দল লখনউ সুপার জায়ান্টসের মালিকানাও রয়েছে গোয়েন্কার হাতে। নর্দার্ন সুপারচার্জার্সের ১০০ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের মালিক সান টিভি নেটওয়ার্ক লিমিটেড। সাদার্ন ব্রেভের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনেছে আইপিএলের আর একটি দল দিল্লি ক্যাপিটালসের অন্যতম অংশীদার জিএমআর গোষ্ঠী। ওয়েলস ফায়ারে ৫০ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে ওয়াশিংটন ফ্রিডম। এ ছাড়া ওভাল ইনভিন্সিবলসে ৪৯ শতাংশ কেনা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মালিক রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর। ট্রেন্ট রকেটসের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনছে কেইন ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড অ্যারিস ম্যানেজমেন্ট।
দ্য হান্ড্রেডের দল কিনে উচ্ছ্বসিত গোয়েন্কা। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার কাছে ক্রিকেট শুধু একটা খেলা নয়। ক্রিকেট আমার কাছে সমাজকে গড়ে তোলা, যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যম। ক্রিকেট মানুষের জীবন গড়ে দেয়। বাচ্চাদের সামনে সুযোগ তৈরি করে। এটা একটা শিক্ষা। একতার পাঠ দেয়। একই বিষয়ে আগ্রহী মানুষদের একত্রিত করে। খেলার প্রতি, দলের প্রতি আবেগ তৈরি করে। ম্যাঞ্চেস্টার অরিজিনালস দুর্দান্ত কাজ করে। যুবসমাজ এবং ক্রিকেটপ্রেমীদের সঙ্গে সুন্দর ভাবে যোগাযোগ রেখে চলে। আমি এই দলের সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। খেলার উন্নয়ন এবং বিকাশের জন্য কাজ করতে চাই।’’
দ্য হান্ড্রেডের এই ব্যবসায়িক সাফল্যে খুশি ইসিবি কর্তারা। ইসিবির চেয়ারম্যান রিচার্ড থম্পসন বলেছেন, ‘‘দ্য হান্ড্রেডের জনপ্রিয়তা ইংল্যান্ডে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রচুর নতুন দর্শক আসছেন মাঠে। মহিলাদের ক্রিকেটের উন্নতিতে অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে এই প্রতিযোগিতার। এই বিনিয়োগ শুধু দ্য হান্ড্রেডকে নয়, গোটা দেশের ক্রিকেট পরিকাঠামো উন্নত করবে।’’ ইসিবি জানিয়েছে, এই অর্থ খরচ করা হবে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের সার্বিক উন্নয়নের জন্য।
প্রতিযোগিতার স্বত্ব সম্পূর্ণ ভাবে থাকবে ইসিবির কাছে। প্রতিযোগিতা পরিচালনার জন্য গঠন করা হবে দ্য হান্ড্রেড বোর্ড। তাতে থাকবেন ইসিবি এবং বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিরা। ক্রিকেটারদের বেতন, স্পনসরশিপ, নিলাম— সব কিছুই নতুন ভাবে করা হবে। ইংল্যান্ড ছাড়াও ভারত, আমেরিকা এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি থেকে সাড়া পাওয়ায় খুশি ইসিবি কর্তারা।