সমাজমাধ্যমে ভারতকে খোঁচা দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অর্থনীতি ‘মৃত’ বলেও দাবি করেছেন তিনি। এই আবহে নিজের লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে দাঁড়িয়ে শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানালেন, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার দৌড়ে এগোচ্ছে ভারত। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, নিজের ‘অর্থনৈতিক স্বার্থ’-এর বিষয়ে অবশ্যই সজাগ থাকবে ভারত। মনে করা হচ্ছে এ ভাবে আসলে ট্রাম্পকেই জবাব দিলেন মোদী।
শনিবার বারাণসীর জনসভায় মোদী বলেন, ‘‘পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হতে চলেছে ভারত। তাই নিজের অর্থনৈতিক স্বার্থের বিষয়ে ভারত অবশ্যই সজাগ থাকবে। আমাদের কৃষক, আমাদের ছোট শিল্প, আমাদের যুবসমাজের চাকরি, তাঁদের স্বার্থই আমাদের কাছে সব। সরকার এই নিয়েই সচেষ্ট।’’ এর পরেই প্রধানমন্ত্রী স্বদেশী দ্রব্য ব্যবহারের উপরে জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দেশের স্বার্থের জন্য যা করা সম্ভব, আমাদের সরকার করছে। যাঁরা দেশের ভাল চান, যাঁরা ভারতকে দুনিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে দেখতে চান, সে যদি কোনও রাজনৈতিক দলও হয়, তা হলে তার বা তাঁদের মতভেদ সরিয়ে রেখে স্বদেশি দ্রব্য ব্যবহার করা নিয়ে পণ করা উচিত। যে জিনিস ভারতীয়েরা তৈরি করেন, শুধু সেটাই কিনব আমরা। দেশীয় জিনিসের জন্য সরব হতে হবে।’’
সম্প্রতি সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্ট করেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, ভারত এবং রাশিয়া, দুই দেশের অর্থনীতিই মৃত। চাইলে এই দুই দেশ আরও অর্থনৈতিক অধোগতির পথে হাঁটতে পারেও বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভারত এবং রাশিয়া কী ভাবে একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়া করবে, তা নিয়ে ভাবিত নন তিনি। তার কারণ ব্যাখ্যা করে ট্রাম্প জানান, চড়া হারের শুল্কের জন্য ভারতের সঙ্গে খুব অল্প পরিমাণ বাণিজ্য করে আমেরিকা। সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, “ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী বোঝাপড়া করছে, তা নিয়ে আমি ভাবিত নই। একসঙ্গে তারা তাদের মৃত অর্থনীতিকে অধঃপতনে নিয়ে যেতে পারে।” একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সংযোজন, “আমরা ভারতের সঙ্গে খুব সামান্য পরিমাণ ব্যবসা করি। তাদের শুল্ক প্রচণ্ড চড়া, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। আর রাশিয়া আর আমেরিকার মধ্যে প্রায় কোনও বাণিজ্যই হয় না।”
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরে দেশেই বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী সরকার। রাহুল গান্ধী এই ‘মৃত অর্থনীতি’ শব্দবন্ধকে রাজনৈতিক স্লোগান বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি খুশি যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি সত্য প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ছাড়া সকলে জানেন ভারতের অর্থনীতি মৃত।’’ অন্য দিকে, সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ভারত যে কোনও বাণিজ্য চুক্তি করার ক্ষেত্রে নিজের জাতীয় স্বার্থ বজায় রাখবে। এ বার বারাণসীতে মোদী আবার সেই কথা মনে করিয়ে দিলেন।