জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর আরও ‘সক্রিয়’ হয়ে উঠেছে ভারত। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসে মদত আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনটাই দাবি করলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। নতুন করে মুখ খুললেন পাকিস্তানে ভারতের সেনা অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়েও। ভারতের বিরুদ্ধে বরাবরই সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলে আসছে পাকিস্তান। অভিযোগ, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান এবং বালোচিস্তানের সশস্ত্র সংগঠনকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হামলা চালাতে নাকি ভারত মদত দেয়। সেই অভিযোগের সূত্র ধরেই পাক সেনাপ্রধান দাবি করলেন, পহেলগাঁও হামলার পর ভারত এই ধরনের কার্যকলাপ দ্বিগুণ করে দিয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এই খবর জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সে কোর কমান্ডার সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন মুনির। সেখান থেকে দাবি করেছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর ভারত এবং পাকিস্তান যে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল, তাতে ভারতের পরাজয় ঘটেছে। মুনিরের কথায়, ‘‘পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পরে, ভারত হেরে যাওয়ার পরে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঘন্য কার্যকলাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ওদের মদতপুষ্ট দুই সংগঠনের মাধ্যমে এটা করা হচ্ছে।’
এক দিন আগেই পাকিস্তানি সেনার ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশন্স (আইএসপিআর)-এর ডিরেক্টর জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী অনুরূপ দাবি করেছিলেন। নয়াদিল্লির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের ‘প্রধান কারিগর’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, পাকিস্তানের এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে ভারত অর্থ, পরিকল্পনা, গোয়েন্দা তথ্য, প্রযুক্তি-সহ নানা ভাবে সাহায্য করে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। স্থগিত করে দেওয়া হয় সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। এর পর গত ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলার চালায় ভারত। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়। এর পর সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ, যা টানা চার দিন চলেছে। পরে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয় ১০ মে। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনও তলানিতে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া এবং সীমান্ত সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ভারত।