বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবিতে ফের সরব ঢাকা! মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের আদালতে হাসিনার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হওয়ার কথা। তার আগে বিবৃতি দিয়ে ভারতের ‘নৈতিক স্বচ্ছতা’ দাবি করল বাংলাদেশ। সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেসসচিব শফিকুল আলম এ বিষয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। তাঁর দাবি, “মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তকে আর আগলে রাখতে পারবে না ভারত।”
ওই পোস্টে ইউনূসের প্রেসসচিব লিখেছেন, “আমরা এখন ভারতকে বিবেক এবং নৈতিক স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। বাংলাদেশ সরকার অনেক দিন ধরে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে আইনানুগ অনুরোধ জানিয়ে আসছে। কিন্তু ভারত তা মানছে না। এটা আর চলবে না। যাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, এমন কাউকে ভারত আর আগলে রাখতে পারবে না। কোনও আঞ্চলিক বন্ধুত্ব, কৌশলগত হিসাবনিকেশ বা কোনও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার— কোনও কিছুই সাধারণ নাগরিকদের ইচ্ছাকৃত ভাবে হত্যাকে আড়াল করতে পারে না।”
সম্প্রতি ব্রিটেনের বিবিসির অন্তর্তদন্তে হাসিনার বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগের কথাও উল্লেখ করেছেন ইউনূসের প্রেসসচিব। তিনি লিখেছেন, ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়েরই দীর্ঘদিনের বন্ধু ব্রিটেন। সেখানকার সংবাদমাধ্যমগুলিও এই নৃশংসতার কথা প্রকাশ করেছে। এই মুহূর্তের গুরুত্ব বিবেচনা করে ভারত যেন ন্যায়বিচার, আইনের শাসন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সম্মান দেখায়, এটাই আমরা চাই।” ঢাকার ওই বিবৃতিতে এ-ও বলা হয়েছে, তারা চায় গোটা বিশ্ব দেখুক কোনও নেতা যতই শক্তিশালী হোন না কেন, কেউ-ই আইনের ঊর্ধ্বে নন।
গত বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে বাংলাদেশে। আন্দোলনের জেরে হাসিনার সরকারের পতন হয়। গত বছরের ৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসেন হাসিনা এবং সাময়িক ভাবে আশ্রয় নেন এ দেশে। এ দিকে হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পরে তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা শুরু হয়। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে ওই মামলা চলছে। বৃহস্পতিবার হাসিনা-সহ তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক ভাবে চার্জ গঠনের নির্দেশ দেওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে ইউনূস প্রশাসন ফের বার্তা দিল নয়াদিল্লির উদ্দেশে।