টাইব্রেকারে ওমানকে হারিয়ে কাফা নেশনস কাপে তৃতীয় স্থানে শেষ করল ভারত, খালিদের দলকে জেতালেন গুরপ্রীত

কাফা নেশনস কাপে তৃতীয় স্থানে শেষ করল ভারত। টাইব্রেকারে ওমানের শেষ শট বাঁচিয়ে জয়ের নায়ক গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। নির্ধারিত সময়ে খেলা ১-১ শেষ হয়েছিল। অতিরিক্ত সময়েও কোনও দল গোল করতে পারেনি। টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জেতে ভারত। পেনাল্টি শুটআউটে ভারতের আনোয়ার আলি এবং উদান্তা সিংহ মিস্ করেন। ওমানেরও প্রথম দু’টি শট বাইরে যায়। পঞ্চম শটটি আটকে দেন গুরপ্রীত। চলতি প্রতিযোগিতায় আরও একটি ম্যাচে গুরপ্রীতের গোলকিপিং জেতাল ভারতকে।

ম্যাচের শুরুটা ভাল করেছিল ওমানই। বাঁ দিক থেকে দৌড়ে বক্সে ক্রস করেছিলেন আল মুশাফিরি। তবে ভারতের রক্ষণ সেই বল ক্লিয়ার করে দেয়। ম্যাচ এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে ওমান জাঁকিয়ে বসতে থাকে। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে তারা। ভারতীয়রা তখন রক্ষণ সামলাতেই ব্যস্ত। বলের দখল ছিল ওমানেরই। ১১ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগ তৈরি করে ভারত। ফ্রিকিক থেকে লালিয়ানজুয়ালা ছাংতের শট বক্সে ভেসে এসেছিল। প্রথমে ওমান সেই বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলেও, ভারত সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।

দু’মিনিট পরে প্রায় গোল করে ফেলেছিল ভারত। লম্বা থ্রো থেকে হেড করেছিলেন আনোয়ার আলি। সেই বল সরাসরি যায় ওমানের কিপার আল মুখাইনির কাছে। দ্রুততার সঙ্গে সেই বল ক্লিয়ার করেন তিনি। এর পর ম্যাচে ভারতের প্রাধান্য বাড়তে থাকে। ওমানের বক্সে একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে বিতর্ক হয়। বিক্রমপ্রতাপ সিংহ এবং আল মুখাইনির মধ্যে সংঘর্ষের কারণে রেফারি ওমানকে ফ্রিকিক দেন। তবে বিক্রম প্রতিবাদ করেন। রেফারি তাতে কর্ণপাত করেননি।

কিছু ক্ষণ পরেই ওমানের কাছে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল। রাহুল ভেকে এবং গুরপ্রীত সিংহ সান্ধুর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে বল পেয়ে গিয়েছিলেন আর রাওয়াহি। তাঁর শটে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। গোলে থাকলে গুরপ্রীতের কিছু করার ছিল না। প্রথমার্ধে ভারত আর একটি সুযোগ তৈরি করলেও গোল হয়নি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে ওমান আগ্রাসী ফুটবল খেলতে থাকে। বোঝাই যাচ্ছিল দ্রুত গোল করতে চায় তারা। হয়ও তাই। ৫৫ মিনিটে এগিয়ে যায় ওমান। টানা চাপের মুখে ভেঙে পড়ে ভারতের রক্ষণ। বাঁ দিক থেকে ভেসে আসা ক্রস প্রথম প্রয়াসেই শট নেন জামিল সালিম আল ইয়াহমাদি। বল গুরপ্রীতকে এড়িয়ে জালে জড়িয়ে যায়।

এর পরেই গোলের লক্ষ্যে মনবীর সিংহ এবং নাওরেম মহেশকে নামিয়ে দেন কোচ খালিদ জামিল। তাতে ভারতের আক্রমণের ঝাঁজও বাড়ে। কিছু ক্ষণ পরে সুরেশ সিংহ এবং উদান্তা সিংহকেও নামিয়ে দেন খালিদ। সেই উদান্তাই সমতা ফেরান। রাহুলের লম্বা থ্রো হেডে ফ্লিক করেছিলেন দানিশ ফারুক। ঝাঁপিয়ে পড়ে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন উদান্তা। ভারতের আক্রমণ আরও বাড়লেও নির্ধারিত সময়ে জয়সূচক গোল করতে পারেনি তারা। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়েও ওমানের মধ্যে গোল করার আগ্রহ বেশি দেখা যায়। নিজেদের মধ্যে পাস খেলতে খেলতে আক্রমণে উঠতে থাকে তারা। এর মাঝেই লাল কার্ড দেখেন ওমানের আলি সুলেমান আল বুসাইদি। ১০ জন হয়ে যায় ওমান। সেই সুযোগে দাপট দেখাতে থাকে ভারতে। এর পর দুই দলের লড়াই হতে থাকে মাঝমাঠে। দু’দলই চেষ্টা করছিল বিপক্ষের ভুলের সুযোগ নিয়ে গোল করার। কিন্তু বিপক্ষের ফুটবলার কম থাকার সুবিধা নিতে পারেনি ভারত। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারে প্রথম শটে গোল করেন ছাংতে। ওমানের আল সাদি মিস্ করেন। দ্বিতীয় প্রয়াসে রাহুল গোল করে ভারতকে ২-০ এগিয়ে দেন। ওমান দ্বিতীয় শটও নষ্ট করে। বারের উপর দিয়ে বল উড়িয়ে দেন আল খাবি। ভারতের সামনে সুযোগ ছিল ৩-০ এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু আনোয়ারের শট বাঁচিয়ে দেন ওমান গোলকিপার। তৃতীয় প্রয়াসে গোল করেন ওমানের আল রুশাইদি। এর পর জিতিন গোল করে ভারতকে ৩-১ এগিয়ে দেন। ওমানের আলি ঘাসানি ৩-২ করেন। পরের প্রয়াসে গোল করলেই জিতত ভারত। সুযোগ নষ্ট করেন উদান্তা। পঞ্চম প্রয়াসে গোল করে সমতা ফেরাতে পারত ওমান। কিন্তু আল ইয়াহমাদির শট বাঁচিয়ে ভারতকে জিতিয়ে দেন গুরপ্রীত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.