ময়নাগুড়ির ‘মাঠে’ মিঠুন, পয়লা দফার প্রচারের শেষ রবিতে পথে নামলেন মহাগুরু, জয় করলেন কি?

পয়লা বৈশাখ থেকে দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ের প্রচারে নামলেন বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। রবিবার জলপাইগুড়িতে রোড শো করলেন অভিনেতা। লোকসভা ভোটের প্রথম দফায় রাজ্যে জলপাইগুড়িতে ভোট রয়েছে। সেখানকার বিজেপি প্রার্থী জয়ন্ত রায়ের সমর্থনে প্রথম নির্বাচনী প্রচার করলেন মিঠুন।

গত ১৬ মার্চ ভোট ঘোষণা হওয়ার পর রাজ্যে বেশ কয়েক বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসেছেন। এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ২০২১ সালে নীলবাড়ির লড়াইয়ে ‘ঝড় তোলা’ মিঠুনকে কবে ভোটের ময়দানে দেখা যাবে, তা নিয়ে জল্পনা ছিলই। তবে বিজেপি সূত্রে খবর ছিল, পয়লা বৈশাখ থেকেই প্রচারে নামবেন অভিনেতা। সেই মতো রবিবার বিকেলে জলপাইগুড়ি যান তিনি। তার আগে দুপুরে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে তিনি বলেন, ‘‘সবে তো প্রচার শুরু করলাম। বাকি কথা পরে হবে।’’ শাসকদল তৃণমূলকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘সত্যি পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তন দরকার। যথেষ্ট হয়েছে।’’ ময়নাগুড়িতে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে রোড শো করেছেন মিঠুন। কিন্তু তাঁর প্রচারে যে রকম ঝাঁজ দেখার জন্য মুখিয়ে থাকেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা, তা রবিবার দেখা গেল না। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ব্রিগেড ময়দানে মোদীর সভামঞ্চে ধুতি-পাঞ্জাবির সঙ্গে কালো টুপি আর কালো চশমায় শোভিত হয়ে হাজির হয়েছিলেন মিঠুন। মোদীর হাত ধরেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। নিজের অভিনীত সিনেমার জনপ্রিয় সংলাপ উদ্ধৃত করে মিঠুন বলেছিলেন, ‘‘আমি জলঢোঁড়াও নই, বেলেবোড়াও নই। আমি একটা কোবরা। আমি জাত গোখরো। এক ছোবলে ছবি।’’ পরে ভোটের প্রচারে নেমে ‘ফাটাকেষ্ট’ ছবির সংলাপ ‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে’ও শুনিয়েছিলেন মিঠুন। সেই সব শুনতে রবিবার ‘মহাগুরু’র রোড শোয়ে বিপুল জনসমাগমও হয়েছিল। কিন্তু সেই ‘ঝাঁজ’ই দেখতে না পেয়ে খানিক আশাহত বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের একাংশ।

জেলার এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘মিঠুন চক্রবর্তী যে ভাবে বলেন, তাতে আমরা উদ্বুদ্ধ হই। তাঁর ডায়লগ শোনার জন্যই তো এত লোক এসেছে। কিন্তু আজ সে রকম কিছু হল না!’’ আর এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘একটু আশাহত হয়েছি ঠিকই। তবে দাদা তো আজ থেকেই প্রচারে নামলেন। সবে তো শুরু হল। আর রোড শোয়ে সেই ভাবে তো কিছু বলার থাকে না। দাদা জনসভা করলে আরও ভিড় হবে। আর বেশি মানুষ তাঁকে শুনতে আসবেন।’’

এ বার মিঠুনকে বাংলা এবং ত্রিপুরার তারকা প্রচারকের তালিকায় রেখেছে বিজেপি। কিন্তু দলের চিন্তা ছিল তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে। কারণ, গত ফেব্রুয়ারি মাসেই কলকাতায় ছবির কাজে এসে শুটিং ফ্লোরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অভিনেতা। কয়েক দিন হাসপাতালেও থাকতে হয়। হাসপাতালে থাকাকালীন রাজ্য বিজেপি নেতারা দেখতে তো যানই, তাঁকে ফোন করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদীও। যে দিন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন, সে দিন বলেছিলেন, দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে পুরোপুরি থাকবেন তিনি। এর পরে শুটিংয়েও যোগ দেন। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হলেও মিঠুনের বয়সও এখন ৭৩। এর উপরে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের গরম। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে ঠাসা কর্মসূচিতে মিঠুন এক বার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বিজেপি সূত্রে খবর, এ বার তাই প্রাথমিক ভাবে কম চাপের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। তবে প্রথম দফার ভোটসূচি মেনে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে কর্মসূচি রয়েছে আগামী দিনে। দ্বিতীয় দফায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কেন্দ্র বালুরঘাটে ভোট। সেখানে মিঠুনের যাওয়ার কথা ২০ এপ্রিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.