যাদবপুরের হস্টেলে পুলিশকে বাধা দেওয়ার মামলায় তিন জনেরই জামিন, তবে ছাড়া পাবেন এক জন

যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশকে বাধা দেওয়ার মামলায় জামিন পেলেন তিন অভিযুক্ত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী জয়দীপ ঘোষ এবং দুই সিনিয়র ছাত্রের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ছিল। অভিযুক্তদের আইনজীবী জানিয়ছেন, এই মামলায় তিনজনকেই জামিন দিয়েছে আদালত। তবে জামিন পেলেও জেল থেকে মুক্তি পাবেন শুধু জয়দীপ। বাকিদের এখনও থাকতে হবে পুলিশ হেফাজতেই।

যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার যাদবপুরের প্রাক্তনী জয়দীপকে আদালতে পেশ করা হয় বুধবার। পাশাপাশি, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার যাদবপুরের দুই পড়ুয়া দীপশেখর দত্ত এবং মনতোষ ঘোষকেও এই একই মামলায় আদালতে তোলা হয়। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় অভিযুক্তদের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, পুলিশ জানিয়েছে, তারা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা পেয়েছিল ৯ অগস্ট রাতে। যদি পুলিশ দায়িত্ব পালনে বাধা পেয়েই থাকে তবে সেই অভিযোগে মামলা করতে তাদের ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগল কেন? পুলিশ তার আগে কী করছিল? সরকারি আইনজীবী এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি। বদলে তিনি আরও একটি অভিযোগ আনেন।

সরকার পক্ষের কৌঁসুলী সৌরীন ঘোষাল আদালতকে জানান, পুলিশকে শুধু হস্টেলে ঢুকতেই বাধা দেওয়া হয়নি, যে হাসপাতালে ওই আহত ছাত্রের চিকিৎসা চলছিল, সেখানেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাদের। কিন্তু এই যুক্তিও খাটেনি। সরকারি আইনজীব বলেছিলেন, সেদিন যদি পুলিশকে বাধা না দেওয়া হয় তা হলে হয়ত বাঁচানোও যেতে পারত ওই ছাত্রকে। সরকারি আইনজীবীর এই মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা।

বুধবার আদালতে জয়দীপের পক্ষে হাজির ছিলেন আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী। এ ছাড়া দীপশেখরের হয়ে আইনজীবী সৌম্যশুভ্র রায় এবং মনোতোষের পক্ষে আইনজীবী ওমি হক সওয়াল করেন। পুলিশ ওই ছাত্রকে বাঁচাতে পারত শুনে তাঁরা বলেন, ‘‘পুলিশ কে আটকানোর সঙ্গে চিকিৎসার কী সম্পর্ক। এতে চিকিৎসায় তো কোনও বাধা হতে পারে না!’’

বুধবার এই মর্মেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্র এবং এক প্রাক্তনীর জামিনের আবেদন করেছিলেন আইনজীবীরা। তাদের যুক্তি ছিল, অভিযুক্তরা পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার কোনও প্রমাণও মেলেনি। তাই জামিন দেওয়া হোক। শুনানি শেষে আদালত অভিযুক্তদের পক্ষেই রায় দেয়। ফলে পুলিশকে বাধা দেওয়ার মামলায় গ্রেফতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী জয়দীপ ছাড়া পান। কিন্তু দীপশেখর এবং মনোতোষের নাম যেহেতু ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার মূল মামলার সঙ্গে জড়িত। তাই সেই মামলায় জামিন না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের হেফাজতেই থাকতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.