পানীয় জলের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বড়জোড়া থানার বেলিয়াতোড়ের বিড়রা, মাঞ্জমুড়া, গোয়ালডাঙ্গা, নতুনগ্ৰাম, বেলেশালা প্রভৃতি গ্ৰামের বাসিন্দাদের মধ্যে।গ্ৰামবাসীদের বক্তব্য, ঘটা করে রাস্তার ধারে পাইপ লাইনের মাধ্যমে টাইম কলের জলের ব্যবস্থা করা হয়, কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরেই কলে আর জল আসছে না।
আষাঢ় শেষ হয়ে শ্রাবনের প্রথম সপ্তাহ শেষ হতে চললো অথচ বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে জঙ্গলমহলের জেলা বাঁকুড়ায় আমন চাষের অবস্থার যেমন দফারফা তেমনি পানীয় জলের হাহাকার দেখা দিয়েছে। গোটা জুলাই
মাসজুড়ে মেঘ আর রোদের লুকোচুরি চলছে। বাঁকুড়ার আকাশ মেঘলা করে বর্ষার আশা জিইয়ে রেখে কখনো ইলসে গুঁড়ি তো কখনো ঝিরঝির করে বৃষ্টি নেমেই থেমে যাচ্ছে।
এদিকে ঘোর বর্ষাকালেও বাঁকুড়ায় গ্রীষ্মের দাপট। ভূ-গর্ভস্থ জলস্তর নেমে গেছে বহু নীচে, ফলে জেলার অধিকাংশ গ্রামীণ এলাকার পানীয় জলের সোর্স নলকূপ এবং কুয়োর জলও ঠিম মত পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে যেসব এলাকায় পাইপলাইনের মাধমে টাইম কলে জল আসে অনেক ক্ষেত্রে সেইসব এলাকাতেও জল সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। সেই কারণে প্রায় দিনই জেলার কোথাও না কোথাও রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছে।
এদিন বিক্ষোভরত গ্ৰামবাসীরা জানান, বর্ষা না হওয়ায় পুকুর, ডোবার জল পর্যন্ত শুকিয়ে গেছে। গবাদি পশুদেরও করুণ অবস্থা। এদিকে মাটির নীচের জলস্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপ থেকেও জল পাওয়া যাচ্ছে না। বড় রাস্তার পাশে পানীয় জল সরবরাহের যে ট্যাঙ্ক রয়েছে তাতে জল নেই। টাইম কলে কখন জল আসবে ভগবানও জানেন না। আগে রোজ দুবেলা জল দেওয়া হত। গত ৩ মাস ধরে ১ বেলা জল দেয়। এক বালতি জলের জন্য পড়শিদের মধ্যে ঝগড়া মারামারি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসনকে বলেও লাভ হয়নি। তাই মানুষের কষ্ট হবে জেনেও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য রাস্তা অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের আশ্বস্ত করলে অবরোধ তোলে গ্রামবাসীরা।
বড়জোড়ার বিধায়ক অলক মুখার্জি বলেন, পাইপ লাইনের গন্ডগোলের কারণেই এই সমস্যা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। দ্রুত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।