‘পাকিস্তানে বন্ধু থাকলে ফোন করতে পারবে না’! গুপ্তচরযোগ নিয়ে সাফাই ধৃত জ্যোতির বাবার, ফেরত চাইলেন মেয়ের ফোন

পাকিস্তানের গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে মেয়ে। এ বার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রের বাবা হরিশ মলহোত্র। তাঁর দাবি, নিজের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিয়ো তুলতেই পাকিস্তানে গিয়েছিলেন জ্যোতি। পুলিশ তাঁদের যে ফোনগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে, সেগুলি ফেরত দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

পাকিস্তানের গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে হরিয়ানার হিসার থেকে জ্যোতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই পরিস্থিতিতে জ্যোতির বাবা সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, “ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিয়ো তুলতে ও (জ্যোতি) প্রায়ই পাকিস্তান এবং অন্যান্য জায়গায় যেত।” পাক গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু বলতে চাননি হরিশ। তবে তিনি বলেন, “যদি সেখানে তাঁর কিছু বন্ধু থাকে, তবে ও তাদের ফোন করতে পারবে না? আমার কোনও দাবিদাওয়া নেই। কিন্তু আমাদের ফোনগুলি ফেরত দিয়ে দেওয়া হোক।”

জ্যোতির একটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। নাম ‘ট্রাভেল উইথ জো’। সেখানে মূলত ভ্রমণের ভিডিয়োই পোস্ট করতেন জ্যোতি। তাঁর অনুগামীর সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৩২ হাজার। জ্যোতির ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিয়ো ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, তিনি মাস দুয়েক আগে, অর্থাৎ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার আগে পাকিস্তান গিয়েছিলেন। অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে ও পারে যাওয়া, লাহৌরের আনারকলি বাজার, পাক পঞ্জাবের কটাস রাজ মন্দির ঘুরে দেখার ভিডিয়োও রয়েছে। পাকিস্তানের খাবার এবং ভারত-পাকিস্তানের সংস্কৃতির তুলনা করেও ভিডিয়ো বানিয়েছিলেন ইউটিউবার।

তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, জ্যোতি প্রথম বার পাকিস্তান যান ২০২৩ সালে। ওই সময়েই নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের আধিকারিক এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। গুপ্তচরবৃত্তি সংক্রান্ত অভিযোগে চলতি সপ্তাহেই দানিশকে ভারতে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়েছে। অভিযোগ, দানিশের মাধ্যমেই পাক গুপ্তচর সংস্থার একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল জ্যোতির। দেশে ফিরে আসার পর হোয়াট্‌সঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার করে পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। পাকিস্তানি চরেদের পরিচয় গোপন রাখতে মোবাইলে অন্য নামে সেই নম্বরগুলি সেভ করতেন জ্যোতি। তার মধ্যে ‘জাট রানধাওয়া’ নামে একটি নম্বর সেভ করা ছিল। তদন্তকারীদের সন্দেহ, ওই নম্বরটি আসলে পাকিস্তানি চর শাকির ওরফে রানা শাহবাজ়ের। সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদন অনুসারে, এক পাকিস্তানি চরের সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’ তৈরি হয়েছিল বলেও তদন্তকারী দল সূত্রে খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.