ধর্ষণের মামলা না তুললে নাবালিকা নির্যাতিতাই ‘কলঙ্কের ভাগীদার’ হবে! এই যুক্তি দেখিয়েই নাবালিকা ধর্ষণের মামলা খারিজের জন্য দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন করলেন অভিযুক্ত। তাঁর আর্জি খারিজ হাই কোর্ট জানিয়েছে, নির্যাতিতা নয়, যিনি অপরাধ করেছেন, তিনিই ‘কলঙ্কের’ ভাগীদার। ধর্ষণের মামলা খারিজের আবেদন জানানোর জন্য অভিযুক্তকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে হাই কোর্ট।
নির্যাতিতার বাবার অভিযোগ, ওই যুবক তাঁর মেয়ের আপত্তিকর ভিডিয়ো তুলেছিলেন। তার পরে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য কিশোরীকে হুমকিও দিতেন অভিযুক্ত। ২০২৪ সালের ওই এফআইআর-এর ভিত্তিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করে পুলিশ। এ বার ওই ধর্ষণের মামলা খারিজের আবেদন জানিয়ে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত। অভিযুক্তের আইনজীবী মামলা খারিজের আর্জিতে যে যুক্তি দেখান, তা অত্যন্ত ‘ঘৃণ্য’ বলে মনে করছে আদালত।
দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি গিরিশ কাঠপালিয়া সম্প্রতি ওই মামলায় জানিয়েছেন, যিনি অন্যায়ের শিকার হয়েছেন, তাঁর কোনও কলঙ্ক থাকার কথা নয়। বরং, যিনি অপরাধটি ঘটাচ্ছেন, কলঙ্কের ভাগীদার তিনিই। বিচারপতি আরও বলেন, “ধর্ষণের মতো ভয়াবহ যন্ত্রণার শিকার হওয়া নির্যাতিতা নয়, অভিযুক্তকে কলঙ্কিত করতে হবে। সমাজে মানসিকতার এই পরিবর্তনটি আনতে হবে।” অভিযুক্তের আর্জি খারিজ করে তাঁকে দিল্লি হাই কোর্টের ‘লিগ্যাল সার্ভিস কমিটি’ (অসহায়দের আইনি সহায়তার বিশেষ ব্যবস্থা)-তে ১০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
নির্যাতিতার বাবা-মা বিষয়টি ‘মিটমাট’ করে নিয়েছেন বলেও আদালতে জানান অভিযুক্তের আইনজীবী। তবে সেই যুক্তিও আদালতে টেকেনি। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, “এই যুক্তিটিও সম্পূর্ণ যুক্তিহীন। কারণ, যিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অর্থাৎ যিনি অভিযোগকারী, একমাত্র তিনিই অভিযুক্তকে ক্ষমা করতে পারেন। তা-ও নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে। এ ক্ষেত্রে অভিযোগকারী এখনও নাবালিকা।”