পটনার হাসপাতালের আইসিইউয়ে গুলিকাণ্ডে কলকাতার আনন্দপুরের একটি গেস্ট হাউস থেকে মূল অভিযুক্ত তৌসিফ রাজা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পটনা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের তরফেও এই গ্রেফতারির কথা জানানো হয়েছে।
পটনার হাসপাতালে খুনের পরই অভিযুক্তেরা ৫৩০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে কলকাতায় এসে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। অভিযুক্তদের মোবাইলের টাওয়ারের অবস্থান চিহ্নিত করে পটনা পুলিশ জানতে পারে যে, অভিযুক্তেরা পশ্চিমবঙ্গে পালিয়েছে। তাঁদের অবস্থান দেখাচ্ছে কলকাতা।
পটনা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, দুষ্কৃতীদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরই কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পটনা পুলিশের একটি দল সেই মতো কলকাতাতেও হাজির হয়। তার পর পটনা এবং কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) শনিবার রাতে আনন্দপুরের একটি আবাসনে হানা দেয়। সেখান থেকেই এই হামলার মূল অভিযুক্ত তৌসিফ-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের আলিপুর আদালতে আদালতে পেশ করা হয়েছে। তার পর তাঁদের ট্রানজিট রিমান্ড চাওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। আর এক অভিযুক্ত নিশু খানকেও অ্যাম্বুল্যান্সে করে আদালতে নিয়ে আসা হয় রবিবার দুপুরে।
পটনা পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক জেরার পর জানা গিয়েছে, হাসপাতালে হামলার ‘ব্লুপ্রিন্ট’ তৈরি হয়েছিল এই নিশুর বাড়িতেই। হামলার মূল দায়িত্বে কে থাকবেন, সেটাও স্থির হয় সেখানে। হামলার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তৌসিফ। যদিও নিশুর দাবি, তাঁর বাড়িতে হামলার কোনও ছক কষা হয়নি।
হাসপাতালের যে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে, সেখানে দেখা গিয়েছে পাঁচ জন হাসপাতালে ঢুকছেন। সকলের হাতে বন্দুক। একেবারে প্রথমে ছিলেন তৌসিফ। সকলের মাথায় টুপি থাকলেও, তৌসিফ কিন্তু খালি মাথাতেই ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, খুনের পর সবার শেষে তাঁকে আইসিইউ থেকে বার হতে দেখা গিয়েছে। সেই ফুটেজ দেখেই তৌসিফকে চিহ্নিত করে পটনা পুলিশ। তার পরই দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে ঢুকে রোগীকে খুন করা হয়। যাঁকে খুন করা হয়েছে, ঘটনাচক্রে সেই ব্যক্তিও কুখ্যাত দুষ্কৃতী। তাঁর নাম চন্দন মিশ্র। তাঁর বিরুদ্ধে মোট ২৪টি মামলা ঝুলছে। তার মধ্যে ১২টি খুনের মামলা রয়েছে।