IACR: IACR-এর ক্যানসার গবেষণায় খুলবে নয়া পথ! কলকাতা জোট বেঁধে জানালেন বিশেষজ্ঞরা…

ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েসান অফ ক্যানসার রিসার্চ (IACR)-এর চুয়াল্লিশতম বার্ষিক সভা ও আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘কনভারজেন্স অফ ট্রানস্লেসনাল অ্যাপ্রচ ইন ক্যানসার থেরানোস্টি’ আগামী ১৬ থেকে ১৮ই জানুয়ারি কলকাতার বিশ্ব বাংলা কনভভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবছর কলকাতায় চিত্তরঞ্জন নাশানাল ক্যানসার ইন্সটিটিটিউটের (CNCI) এই সম্মেলনের প্রধান উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথমদিনে হল এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) হিসাব অনুসারে পৃথিবীতে প্রায় প্রতি পাঁচজনে একজন  ক্যানসারে আক্রান্ত। ২০২২ সালের এই সংস্থার এক সমীক্ষায় জানা গেছে যে বিশ্বে  প্রায় কুড়ি মিলিয়ন মানুষ নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন অন্য দিকে ক্যানসার চিকিৎসার পর পাঁচ বছর বা তাঁর সুস্থ স্বাভাবিক জীবন করছেন প্রায় ৫৩.৫ মিলিয়ন মানুষ। 

পৃথিবীতে নতুন ক্যানসার রোগীদের মধ্যে সবথেকে বেশি মানুষ লাং ক্যানসারে ভোগেন(২.৫ মিলিয়ন), এর পরেই আছে ব্রেস্ট ক্যানসার (২.৩ মিলিয়ন), কোলোরেক্টাল ক্যানসার (১.৯ মিলিয়ন) ও প্রস্টেট ক্যানসার (১.৫ মিলিয়ন)। আবার আমাদের দেশে পরের বছর ২০২৩ সালে নতুন ক্যানসার রোগীর সংখ্যা ছিল ১৪৯৬৯৭২। আমাদের দেশে পুরুষদের মধ্যে সবথেকে বেশী দেখা যায় ওরাল ক্যানসার, তারপরেই স্থান ফুসফুস ও খাদ্যনালীর ক্যানসারের। অন্যদিকে মহিলাদের মধ্যে সবথেকে বেশি দেখা যায় যথাক্রমে ব্রেস্ট, সারভিক্স ও ওভারিয়ান ক্য্যানসার।

এই পরিপ্রেক্ষিতে এই গুরুত্বপুর্ন সম্মেলনে আধুনিক ক্যানসার চিকিৎসার অন্যতম মাইলস্টোন ইমিউনো থেরাপির সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও এই চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন নতুন ওষুধ সম্পর্কিত আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। নভি মুম্বইয়ের ACTREC, ব্যাঙ্গলোরের IISC, নতুন দিল্লির NII ও AIMS, ভোপালের IISER, কল্যানীর NIBMG , প্রভৃতি ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও  ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা  সম্মেলনে যোগদান করেন। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণারত কয়েকজন অনাবাসী ভারতীয় বিজ্ঞানী সেদেশের ক্যানসার গবেষণার বর্তমান অগ্রগতি সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। জিনোমিক্স, বিভিন্ন ক্যানসার চিকিৎসার প্রধান ওষুধ বা প্রিসিসান মেডিসিন এবং ক্যানসার চিকিৎসায় কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ এই সম্মেলনের প্রধান আলোচনার বিষয়। আজকের এই সম্পর্কিত গবেষণা গুলিই আগামী দিনের ক্যানসার চিকিৎসার দিশা হয়ে উঠতে চলেছে।

চিত্তরঞ্জন ক্যানসার রিসার্চ ইন্সটিটিউটের সহায়তায় ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশান অফ ক্যানসার রিসার্চের ওয়েস্টবেঙ্গল চ্যাপটার দেশের ক্যানসার গবেষণার অন্যতম পথিকৃৎ ক্যানসার রিসার্চ সোসাইটি IACR এর বাৎসরিক কার্য্যক্রমের অঙ্গ  এই সম্মেলন আয়োজন করেন। উল্লেখ্য রাজ্যের প্রধান দশটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা কেন্দ্রের ক্যানসার গবেষণা শাখা IACR ওয়েস্ট বেঙ্গল চ্যাপ্টারের সদস্য। IACR এর সভাপতি ও CNCI এর ডাইরেক্টর ডা. জয়ন্ত চক্রবর্তির ভাষণে সম্মেলনের সূচনা হয়। এক প্রশ্নের উত্তরে ডা. জয়ন্ত চক্রবর্তি জানান খুব শীঘ্রই CNCI এর নিউ টাউন কাম্পাসে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট চালু হতে চলেছে।   

এই সম্মেলনে ক্যানসার গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য পুণার ন্যাশানাল সেন্টার ফর সেল সায়েন্সের অধিকর্তা ও অগ্রণী ক্যানসার বায়োলজিস্ট অধ্যাপক শর্মিলা বাপাতকে মর্যাদাপুর্ন এম জি দেও ওরেশন পুরষ্কারে সম্মানিত করা হয়। সম্মেলনের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি ও CNCI এর সিনিয়ার সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. ডোনা সিনহা জানান সম্পুর্ন সম্মেলনটিকে বারোটি সায়েন্টিফিক সেশন দুটি প্যানেল ডিসকাশনে সাজান হয়। এগুলির মধ্যে মাঝে মাঝেই ছিল তরুণ গবেষকদের উৎসাহ প্রদানে বিভিন্ন পুরষ্কার প্রদানের অনুষ্ঠান।  তিন দিনের এই সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৩৫০ জন প্রতিনিধি যোগদান করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.