পরিবেশ সচেতনতার প্রচার করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার কলেজের অধ্যক্ষ! স্থানীয় এক তৃণমূলকর্মী তাঁকে রাস্তায় প্রকাশ্যে নিগ্রহ করেছেন বলে অভিযোগ তাঁর। এই ঘটনায় অপমানিত হয়ে কেঁদেই ফেললেন অধ্যক্ষ। জানালেন, তিনি অন্য জায়গায় বদলি হওয়ার চেষ্টা করবেন। যদি তা সম্ভব না হয়, চাকরিই ছেড়ে দেবেন।
স্থানীয় তৃণমূলকর্মী অজয় ঘোষের বিরুদ্ধে নদিয়ার চাপড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন চাপড়া জেনারেল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস পাণ্ডে। তিনি জানান, তিনি মূলত পরিবেশ রক্ষার উপরে কাজ করেন। বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। এই কাজ করতে গিয়েই শুভাশিস দেখেন, চাপড়া থানা এলাকায় রাজ্য সড়কের একাধিক নয়ানজুলি আর ঝোপঝাড় উধাও হয়ে গিয়েছে। নয়ানজুলি ভরাট করে দোকান তৈরি হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার সচেতনতা বাড়াতেই সেখানে বোর্ড লাগিয়ে দিয়েছিলেন শুভাশিস। কিন্তু সম্প্রতি তিনি দেখেন, কেউ সেই বোর্ড ভেঙে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সেগুলিই মেরামত করতে গিয়েছিলেন। সেই সময়েই অজয় তাঁকে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ শুভাশিসের। অজয়ের ভাই চাপড়া হাটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য।
শুভাশিস জানান, অজয়ের হাতে নিগৃহীত হওয়ার পর এলাকার লোকেরাই তাঁকে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শুভাশিস। পরে তিনি বলেন, ‘‘ডিপার্টমেন্টকে বলব, যে কোনও জায়গায় আমাকে ট্রান্সফার করে দিন। আমি ট্রান্সফার নিয়ে নেব। যদি তা-ও সম্ভব না হয়, তা হলে চাকরিটাই ছেড়ে দেব। আমাকে যে ভাবে মারধর করা হয়েছে, তাতে আমি এই কলেজে কিছুতেই আর কাজ করতে চাই না।’’
শুভাশিসকে মারধরের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন অজয়। তিনি বলেন, ‘‘সেই সময় আমার মানসিক অবস্থা ভাল ছিল না। সেখানে যদি নিজের বাবাও থাকত, আমি তাকেও মারতাম। আমি তখন খুব রেগে গিয়েছিলাম। মাথায় রক্ত উঠে গিয়েছিল। পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। আমি নিজের অন্যায় স্বীকার করে নিচ্ছি।”