ইংল্যান্ডে ভারতীয় দলকে যখন নেতৃত্ব দিতে নামবেন, তখন পাশে পাবেন না বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। কিন্তু এই তিন ক্রিকেটারই তাঁকে শিখিয়েছেন কী ভাবে টেস্ট বা সিরিজ় জিততে হয়। অধিনায়ক হয়ে প্রথম বার মুখ খুলে বললেন শুভমন গিল। একই সঙ্গে ব্যাখ্যা করলেন সাফল্যের মন্ত্রও।
শুভমন অধিনায়ক হওয়ার পর বোর্ড একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। সেখানে শুভমন বলেছেন, “রোহিত ভাই, বিরাট ভাই, অশ্বিন ভাই আমাদের সামনে নীল নকশা এঁকে বুঝিয়ে দিয়েছে কী ভাবে দেশের বাইরে সিরিজ় জেতা যায়। মাঠে নেমে পরিকল্পনা কাজে লাগানোটা আলাদা ঠিকই। কিন্তু নীল নকশা হাতের কাছে থাকলে আমরা জানতে পারব কী ভাবে বিদেশে গিয়ে সিরিজ় জিততে হয়।”
রোহিত এবং কোহলির বিপরীত ধরনের অধিনায়কত্বের কথা তুলে ধরে শুভমন ব্যাখ্যা করেছেন, কী ভাবে দু’জনের থেকে শেখার রয়েছে। শুভমনের কথায়, “ছোটবেলায় ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের খেলা দেখে অনুপ্রেরণা পেতাম। বিরাট ভাই এবং রোহিত ভাইয়ের মতো ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলতে পেরে আমি গর্বিত।”
শুভমনের সংযোজন, “দু’জনের স্টাইল আলাদা। কিন্তু লক্ষ্যটা একই থাকত। অধিনায়ক হিসাবে আপনি শুধু জিততে চাইবেন। তাতে আপনার স্টাইল আলাদা হতেই পারে। কোহলি-রোহিত হয়তো অধিনায়ক হিসাবে আলাদা। কিন্তু নিজেদের মতো করে ঠিক।”
কোহলিকে আগ্রাসী অধিনায়ক হিসাবে বিশ্ব চেনে। সেটা মেনে নিয়েছেন শুভমনও। তবে আপাতশান্ত রোহিতকেও আগ্রাসী হিসাবে উল্লেখ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, রোহিতের সেই আগ্রাসন বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় না।
শুভমনের কথায়, “বিরাট ভাই সব সময় আগ্রাসী থেকেছে। জেতার খিদে এবং আবেগ দিয়ে সব সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চেয়েছে। রোহিত ভাইও আগ্রাসী ছিল। তবে ওর আচরণ দেখে সেটা বোঝা যেত না। ভেতরে ভেতরে রোহিত ভাইও মাঠে আগ্রাসী থাকতে ভালবাসে।”
শুভমন যোগ করেছেন, “রোহিত ভাই এমনিতে বেশ শান্ত ছিল। কৌশলগত ভাবে বাকিদের থেকে আলাদা। সবার সঙ্গে স্পষ্ট করে কথা বলত। জানিয়ে দিত ও কী চায়। এ সব দেখেই আমি শিখেছি।”
শুভমন জানিয়েছেন, অধিনায়ক হিসাবে শুধু উদাহরণ তৈরি করাই নয়, সতীর্থদের মন খুলে খেলতে দেওয়াও তাঁর নেতৃত্বের দর্শন। শুভমনের ব্যাখ্যা, “আমি উদাহরণ তুলে ধরে নেতৃত্ব দিতে চাই। শুধু পারফরম্যান্স দিয়ে নয়, মাঠের বাইরের শৃঙ্খলা এবং কঠোর পরিশ্রম দিয়েও। অধিনায়ক হিসাবে শুধু কখন এগিয়ে যেতে হবে সেটা জানলেই হবে না। সতীর্থদের নিজেদের মতো করে খেলার জায়গাও দিতে হবে। কারণ প্রত্যেকে আলাদা আলাদা ভাবে উঠে এসেছে। প্রত্যেকের জীবন আলাদা।”
শুভমন যোগ করেছেন, “প্রত্যেকের আলাদা ব্যক্তিত্ব রয়েছে। ভাল নেতা সে-ই হবে যে বাকিদের নিজস্ব জায়গা বজায় রাখতে হবে, তাদের থেকে সেরাটা বার করে আনতে সাহায্য করবে। সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলা, ওদের মনের গভীরে গিয়ে বোঝার চেষ্টা করা, কী ভাবে সেরাটা বার করে আনা যাবে এগুলো ভাবাও একজন অধিনায়কের দায়িত্ব।”