গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে খারাপ শট খেলে আউট হওয়ার জন্য বার বার সমালোচিত হতে হয়েছে তাঁকে। শুক্রবারও তার ব্যতিক্রম হল না। তবে সাম্প্রতিক কালে সেই ঋষভ পন্থকে সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে দেখা গেল। গায়ে-মাথায় একাধিক বার বলের আঘাত লাগল। দিনের শেষে অবশ্য পন্থ হাসিমুখেই সে সব মেনে নিয়েছেন। জানিয়েছেন, দেশের জন্য এ রকম আঘাত সহ্য করতে তিনি তৈরি।
ম্যাচের পর শুরুতেই পন্থকে প্রশ্ন করা হয় তাঁর আঘাত নিয়ে। সামান্য হেসে ভারতের উইকেটকিপার বলেন, “ব্যথা অবশ্যই লেগেছে। তবে কখনও সখনও আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তাতে অসুবিধা নেই। কোথায় কোথায় বলের আঘাত লেগেছে সেটা নিয়ে ভাবছিই না। বলগুলো যে নিজের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে খেলতে পেরেছি সেটাই আসল।”
পন্থ জানিয়েছেন, ব্যাট করার সময় এত বার বলের আঘাত আগে কখনও খাননি। বলেছেন, “মনে হয় এই প্রথম ব্যাটিংয়ের সময় এত বার বলের আঘাত খেলাম। আসলে ক্রিকেটে কোনও পরিকল্পনা করে নামা যায় না। কেরিয়ারের কোনও না কোনও সময় সব কিছুই প্রথম বার ঘটে। আজ সেটা আমার সঙ্গে হয়েছে। আমি খুব বেশি ভাবছি না এটা নিয়ে।”
সিডনিতে ৯৮টি বল খেলেছেন পন্থ। তার মধ্যে গায়ে-মাথায় আঘাত পেয়েছেন ১২ বার। পড়ে গিয়েছেন। মাঠে ফিজিয়ো এসে শুশ্রূষা করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার পেসারেরা জানতেন শর্ট বলের বিরুদ্ধে পন্থের সমস্যা হয়। সেটাকেই বার বার অস্ত্র করেছেন তাঁরা। একের পর এক ম্যাচে শর্ট বলে উইকেট দিয়েছেন পন্থ। ম্যাচের পরিস্থিতি বা দলের প্রয়োজন, কোনওটাই মাথায় রাখেননি তিনি। কোচ এবং অধিনায়ক বলার পরেও একই ভুল এ দিনও করেছেন পন্থ।
অস্ট্রেলিয়া সফর শুরু হওয়ার আগে নিজেদের মধ্যে একটি ম্যাচ খেলেছিল ভারত। সেখানেও মুকেশ কুমার, নীতীশ রেড্ডিরা বল হাতে পন্থকে বার বার বাউন্সার দিচ্ছিলেন। শর্ট বলে পন্থের এই দুর্বলতা এখনও পর্যন্ত সিরিজ়ে ঢাকা যায়নি। শুক্রবার দ্বিতীয় সেশনে কোনও মতে বাউন্সারগুলির বিরুদ্ধে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। বার বার গায়ে, মাথায় বল লাগছিল। তৃতীয় সেশনে শুরুর দিকে তাঁকে বাউন্সার দেওয়া হয়নি। কিন্তু স্কট বোলান্ড বল করতে এসেই শর্ট বল করেছিলেন। পন্থও লোভ সামলাতে পারেননি। তিনি ব্যাট চালান। বল লাগে ব্যাটের সামনের দিকে। মিড-অনে ক্যাচ নেন প্যাট কামিন্স।
সিডনি টেস্টের আগে ভারতীয় দলের সাজঘরের খবর প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। শোনা গিয়েছিল, পরিস্থিতি না বুঝে খেলার জন্য ক্রিকেটারদের ধমক দিয়েছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। কোচ গম্ভীর কারও নাম নেননি, কিন্তু তিনি ক্রিকেটারদের খেলায় ক্ষুব্ধ। সেই সব ক্রিকেটারের তিনি সমালোচনা করেছিলেন যাঁরা দলের কথা না ভেবে নিজেদের ইচ্ছেমতো শট খেলেছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেননি তাঁরা। গম্ভীর কারও নাম না নিলেও মেলবোর্নে দ্বিতীয় ইনিংসে পরিস্থিতি না বুঝে শট খেলার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন পন্থ। তাই মনে করা হচ্ছে তাঁকেই সাবধান করে দিতে চেয়েছিলেন গম্ভীর। সিডনিতেও নিজেকে শুধরে নিতে পারলেন না পন্থ।