ভারতমায়ের সেবায় বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকব! পহেলগাঁও হামলার প্রত্যাঘাত নিয়ে রাজস্থানের বিকানেরের জনসভা থেকে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এমনটাই বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, পহেলগাঁও সন্ত্রাসে ১৪০ কোটি দেশবাসী আহত হয়েছিল। কিন্তু সিঁদুর যখন বারুদে পরিণত হয়, তার পরিণতি কী হয়, তা দেখল গোটা বিশ্ব!
বৃহস্পতিবার রাজস্থানের পাক সীমান্তবর্তী জেলা বিকানেরে এক জনসভা থেকে ১০৩টি অমৃত ভারত স্টেশন ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পে দেশের সহস্রাধিক রেলস্টেশন আধুনিক করে গড়ে তোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে ১০৩টি স্টেশন। বিভিন্ন রাজ্যের স্বকীয় শিল্প, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে এই স্টেশনগুলিতে। সেখানেই কথাপ্রসঙ্গে উঠে আসে পহেলগাঁও হামলা এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর কথাও। মোদী বলেন, ‘‘যারা ভারতের মা-বোনেদের মাথার সিঁদুর মুছে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তাদের মোক্ষম জবাব দেওয়া হয়েছে। ২২ এপ্রিলের হামলার জবাব দেওয়া হয়েছে মাত্র ২২ মিনিটে! ন’টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
বিকানেরের জনসভা থেকে পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তানের মাটিতে কী ভাবে প্রত্যাঘাত হানা হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গেও বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন মোদী। পাশাপাশি, স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদকে কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না। পহেলগাঁওয়ে হামলার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ই তার প্রমাণ, এমনটাই দাবি প্রধানমন্ত্রীর। মোদী বলেন, ‘‘পাকিস্তানের রহিম ইয়ার খান বায়ুসেনাঘাঁটি এখন আইসিইউ-তে রয়েছে! সিঁদুর যারা মুছতে এসেছিল, তাদের মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিজেদের দেশকে কোনও ভাবেই নত হতে দেব না। প্রথমে ঘরে ঢুকে মেরেছিলাম। এ বার সরাসরি বুকে মেরেছি।’’
উল্লেখ্য, পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে তিন সশস্ত্র বাহিনীকেই পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। মোদীর কথায়, তিন সেনা মিলে এমন ‘চক্রব্যূহ’ তৈরি করেছিল, যে পাকিস্তান ‘নতজানু’ হয়ে বসতে বাধ্য হয়। শুধু তা-ই নয়, তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, সামনাসামনি লড়াই হলে কোনও দিনই জিতবে না পাকিস্তান। কারণ, ভারত ও ভারতমায়ের সেবায় বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন তিনি। মোদী বলেন, ‘‘আমার শরীরে এখন রক্ত নয়, সিঁদুর বইছে। এটা প্রতিশোধের খেলা নয়, এটা ন্যায়ের নতুন রূপ, যার নাম অপারেশন সিঁদুর। যারা নিজেদের অস্ত্রে গর্ব করত, আজ তারা হতাশায় ভুগছে।’’
বৃহস্পতিবার প্রথমে করণী মাতার মন্দিরে পুজো দিতে যান প্রধানমন্ত্রী। তার পর দেশনোক স্টেশন উদ্বোধন করেন। করণী মাতার মন্দিরের নিকটবর্তী এই স্টেশন মন্দিরের স্থাপত্যের আদলেই গড়া হয়েছে। দেশনোক থেকে বিকানেরের জনসভায় পৌঁছোন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকেই দেশের মোট ১০৩টি অমৃত স্টেশনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।