‘মোকা’ তৈরি হলে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে? কেমন ঘূর্ণিঝড় হবে? জানিয়ে দিল মৌসম ভবন

ক্রমেই কপালে ভাঁজ ফেলেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস মিললে চলতি সপ্তাহেই তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড় (সাইক্লোন)। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এই নিম্নচাপই পরে আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে তৈরি হতে পারে। আর তার পর জন্ম নিতে পারে ‘মোকা’। ঘূর্ণিঝড়ের নাম রেখেছে ইয়েমেন। প্রাচীন বন্দর শহর মোকার নামে ঝড়ের নাম রাখা হয়েছে। তবে এই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তা কোথায় আছড়ে পড়বে, এ নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি। এর মধ্যেই এক আশঙ্কার কথা শোনাল মৌসম ভবন।

ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তা কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। এই আবহে সোমবার মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, ‘মোকা’ তৈরি হলে, তা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ফলে ভয়ঙ্কর রূপে ‘মোকা’ স্থলভাগে আছড়ে পড়লে তার তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা। তবে অনেক সময়ই ঘূর্ণিঝড় যখন স্থলভাগে পৌঁছয়, তখন তার শক্তি অনেকটা কমে যায়। ‘মোকা’র ক্ষেত্রেও তেমনটা হবে কি না, তা অবশ্য এখনই জানা যায়নি।

গত কয়েক বছরে মে মাসে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছিল এই রাজ্যেও। ২০২০ সালে আমপানের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। এ বার আবার মে মাসে ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। যা ঘিরে আতঙ্কে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশার মতো রাজ্যগুলি। ঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে দুই রাজ্যের সরকার।

মৌসম ভবন জানিয়েছে, সোমবার সকালে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন আন্দামান সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এই নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হয়ে মঙ্গলবার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর পর বুধবার আরও শক্তি সঞ্চয় করে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর পর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিক বরাবর এগোবে। ১১ তারিখের পরই পথ বদলাতে পারে ঘূর্ণিঝড়। কিছুটা বাঁক নিয়ে উত্তর,উত্তর-পূর্ব দিক বরাবর বাংলাদেশ-মায়ানমার উপকূলের দিকে এগোবে।

তা হলে কি ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ বা মায়ানমারের দিকেই যেতে পারে? আবহাওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি (মডেল) অনুযায়ী জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ অথবা মায়ানমারে দিকে ঝড়ের অভিমুখ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই দুই দেশের কোথাও আঘাত হানতে পারে ‘মোকা’। তবে পুরোটাই সম্ভাবনা। এই ব্যাপারে এখনই মৌসম ভবন নিশ্চিত ভাবে কিছু জানায়নি। মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল জানিয়েছেন, গোটা পরিস্থিতির উপর সর্বদা নজর রাখা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, চলতি সপ্তাহে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। তবে কখন তা আছড়ে পড়বে, তা এখনই স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি মৌসম ভবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.