প্রতিরক্ষায় কতটা দক্ষ ভারত? সংঘাতের পর গোয়েন্দা তথ্য নয়াদিল্লির আর এক ‘শত্রু’ দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান!

ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কতটা শক্তিশালী? কতটা দক্ষ ভারতের যুদ্ধবিমানের পাইলটেরা? যাবতীয় গোয়েন্দা তথ্য চিনের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে পাকিস্তান! এমনটাই দাবি করলেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। গত মাসে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলিতে হামলা চালিয়েছিল ভারত। তার পর টানা চার দিন দুই দেশের মধ্যে সেনা সংঘাত চলেছে। পাক মন্ত্রীর দাবি, এই সংঘাতের পরেই চিনের সঙ্গে ভারত সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করে নিয়েছেন তাঁরা। চিনে পাঠানো হয়েছে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য। এই তথ্য চিনের সঙ্গে ভাগ করাকে ‘অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা’ বলেও উল্লেখ করেছেন পাক মন্ত্রী। কারণ, চিনের সঙ্গেও ভারতের দ্বন্দ্ব রয়েছে এবং সে কথা কারও অজানা নয়। সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ়কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন আসিফ।

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের সময়ে ভারত কী ভাবে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যবহার করছিল, কী ভাবে বিভিন্ন ক্রুজ় এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল, সেই সংক্রান্ত তথ্য কি চিনকেও পাঠিয়েছে পাকিস্তান? সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয়েছিল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এটা খুবই স্বাভাবিক। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, তা যদি আমাদের জন্য বা চিনের জন্য ক্ষতিকর হয়ে থাকে, তবে তা জানানো তো দরকার। ভারতের সঙ্গে তো চিনেরও সমস্যা রয়েছে। কৃত্রিম উপগ্রহ বা অন্য জায়গা থেকে আমরা যা গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছি, তা চিনের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়াই স্বাভাবিক বলে আমি মনে করি।’’

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করেছিল ভারত। ৬ মে মধ্যরাতে শুরু হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তানের অনেক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস হয়ে যায় ভারতের হামলায়। টানা সংঘর্ষের পর ১০ মে দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। তবে এখনও ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক এবং কূটনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, ভারত এবং পাকিস্তানের এই সংঘাত থেকে চিনের বিশেষ সুবিধা হয়েছে। কারণ এর মাধ্যমে তারা বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভারতের পাইলট, যুদ্ধবিমান, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ এবং অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছে। ভবিষ্যতে চিনের সঙ্গে ভারতের এমন কোনও সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হলে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবে বেজিং। পাকিস্তান থেকে গোয়েন্দা সহায়তা পাওয়ায় তাদের আরও সুবিধা হয়েছে।

পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক বরাবরই ঘনিষ্ঠ। ভারতের সঙ্গে উভয়ের বিরোধ এই ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়িয়েছে বলে মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের। পাকিস্তানের সামরিক সরঞ্জামের প্রধান সরবরাহকারী চিন। যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে ক্ষেপণাস্ত্র, নজরদারির নানা প্রযুক্তি তারা সরবরাহ করে। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সংঘাতের আবহে চিন থেকে দুই দেশকেই ফোন করা হয়েছিল। উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দিয়েছিল বেজিং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.