শনিবার, ৩ মে প্রকাশিত হল চলতি বছরের হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল পরীক্ষার ফলাফল। মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি আবু তাহের কামরুদ্দিন সাংবাদিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট পর্ষদের তরফে হাই মাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিল পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘হাইমাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই! আমি আশা করি তোমরা ভবিষ্যতে আরও সাফল্য পাবে। তোমাদের জীবনের এই বিশেষ দিনটিতে, আমি তোমাদের বাবা-মা, তোমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক-সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাঁদের সহায়তাই তোমাদের সাফল্যের চাবিকাঠি। আর যারা আজকে ভাল ফল করতে পারোনি, তাদের আমি বলব, মন খারাপ করো না। চেষ্টা চালিয়ে যাও। সামনের দিনে তোমরাও অবশ্যই সফল হবে। তোমাদের সবাইকে আবারও আমার অনেক আশীর্বাদ আর শুভকামনা জানাই। তোমরা সবাই ভাল থেকো।’’
পরীক্ষা শেষের প্রায় ৪০ দিনের মাথায় ফলাফল প্রকাশ করা হল। তিনটি বিভাগ (মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল) মিলিয়ে প্রথম দশে স্থান অধিকার করেছে ৩৭ জন। এর মধ্যে হাই মাদ্রাসায় ১৫ জন, আলিমে ১০ জন, ফাজিলে ১২জন। ৩৭ জনের তালিকায় ছাত্রী রয়েছে ১৬ জন এবং ছাত্রের সংখ্যা ২১জন।
হাই মাদ্রাসায় প্রথম তিন
হাই মাদ্রাসায় ছাত্রদের চাইতে ছাত্রীরা এগিয়ে। প্রথম দশে ১৫ জনের নাম রয়েছে। তার মধ্যে ১২ জন ছাত্রী। জেলার ভিত্তিতে প্রথমে পূর্ব মেদিনীপুর (পাশের হার ৯৭.৫৪ শতাংশ)। দ্বিতীয় আলিপুরদুয়ার (পাশের হার ৯৫.৬৩ শতাংশ) এবং তৃতীয় হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা (পাশের হার ৯৫.২১ শতাংশ)।
মোট পরীক্ষার্থী হাই মাদ্রাসায় ৪৪ হাজার ৭৩ জন। পাশ করেছে ৩৯ হাজার ৮০৬ জন (পাশের হার ৯০.৩২ শতাংশ)। চলতি বছর যুগ্ম প্রথম হয়েছে হাই মাদ্রাসায়। মালদহের ফাহমিদা ইয়াসমিন ও শাহিদা পারভিন। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৭৮০। দ্বিতীয় হয়েছে মালদহের শ্যামসুন নেহার। তার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭৬। তৃতীয় হয়েছে মালদহ থেকে আলিফনুর খাতুন। তার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭২।
আলিম-এ প্রথম তিন
আলিমে মোট পরীক্ষার্থী ১১ হাজার ৫৮৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ৩০২, ছাত্রী ৫ হাজার ২৮৬ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ১০ হাজার ৭৫৫ জন (পাশের হার ৯২.৮১ শতাংশ)। প্রথম দশে রয়েছে ১০ জন। এর মধ্যে আট জন ছাত্র ও দু’জন ছাত্রী। প্রথম হয়েছে মহম্মদ সৈয়দ আলম মণ্ডল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৮৭৩। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ৮৭০ নম্বর পেয়ে মাসুম বিল্লা গাজ়ি। তৃতীয় হয়েছে মহম্মদ ওমার ফারুক মণ্ডল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৮৫৩।
ফাজিল-এ প্রথম তিন
ফাজিলে মোট পরীক্ষার্থী চার হাজার ৭১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র দু’হাজার ৬৩১, ছাত্রী দু’হাজার ৮২জন। উত্তীর্ণ হয়েছে চার হাজার ৩৯০ জন (পাশের হার ৯৩.১৫ শতাংশ)। প্রথম দশে রয়েছে ১২ জন। এর মধ্যে ন’জন ছাত্র ও তিন জন ছাত্রী। প্রথম হয়েছে ইয়ামিন শেখ। তার প্রাপ্ত নম্বর ৫৬২। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাইহান হোসেন ও বাকিবিল্লা গায়েন। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৫৫৯। তৃতীয় হয়েছে আব্দুল হালিম, তার প্রাপ্ত নম্বর ৫৫৮।
পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন চলতি বছর থেকে চালু হচ্ছে তৎকাল পিপিএস ও পিপিআর (স্ক্রুটিনি এবং রিভিউ)। ৩ মে থেকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তৎকালের জন্য আবেদন করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। যার ফলাফল ১৫ দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে পর্ষদ।
চলতি বছর হাই মাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিল পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে। সমস্ত পরীক্ষাই শেষ হয়েছে ৫ মার্চ। ২০৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছে। তিনটি বিভাগ মিলিয়ে এ বছর প্রায় ৬০ হাজার ৩৭৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ২৪ হাজার ৩৫৩, ছাত্রীর সংখ্যা ৩৬ হাজার ২১।