পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের স্ত্রীকে তথ্য কমিশনের সদস্য পদে নিয়োগের অনুমতি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস

রাজ্যের তথ্য কমিশনার পদে সরকার মনোনীত দুই নামেই সম্মতি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। নবনিযুক্ত এই দুই কমিশনার হলেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি রাজীব কুমারের স্ত্রী তথা প্রাক্তন আইআরএস অফিসার সঞ্চিতা কুমার এবং পুরুলিয়ার প্রাক্তন সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাতো। বুধবার রাজভবনের তরফে রাজ্যপালের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক এই নিয়োগের কথা জানিয়েছেন।

এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে একাধিক রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সাক্ষী থেকেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। এ বছরের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে রাজ্যের তথ্য কমিশনের সদস্য মনোনয়নের জন্য একটি বৈঠক ডাকা হয় বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে। নিয়মানুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং স্পিকার বৈঠক করে দু’টি নাম চূড়ান্ত করেন। নিয়মমাফিক সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেই বৈঠকে হাজির না হওয়ায়, সরকার মনোনীত প্রার্থীদের নামেই সিলমোহর পড়ে যায়।

এরপর সেই নামগুলি পাঠানো হয় রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য। প্রায় দেড় মাস ধরে ফাইল রাজভবনে আটকে থাকার পর অবশেষে তাতে সম্মতি দিলেন রাজ্যপাল। বুধবার রাজ্যপালের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, ওই দুই মনোনীতের নামেই সম্মতি দিয়েছেন তিনি। এই দুটি নিয়োগ ছাড়াও, রাজ্যপাল মঙ্গল ও বুধবার মিলিয়ে রাজভবনে আটকে থাকা পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিলেও সম্মতি দিয়েছেন। যার মধ্যে অন্যতম হাওড়া পুরসভা সংক্রান্ত সংশোধনী বিল। ২০২১ সাল থেকে এই বিল রাজভবনে আটকে থাকায় হাওড়া পুরসভায় নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। রাজ্য সরকার বার বার রাজ্যপালকে বিলটিতে সম্মতির অনুরোধ জানালেও, নানা কারণে অনুমোদন মিলছিল না। অবশেষে সেই জট কাটল।

পরিষদীয় দফতর সূত্রে খবর, অন্যান্য যেসব বিল রাজ্যপাল সম্মতি দিয়েছেন, সেগুলির মধ্যে রয়েছে কিছু শিক্ষা ও প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত প্রস্তাব, যেগুলি দীর্ঘদিন ধরে রাজভবনে আটকে ছিল। এখনও বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল রাজভবনে আটকে রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পর বিধানসভায় পাশ হওয়া অপরাজিতা বিল।

তবে সপ্তাহের শুরুতেই পাঁচটি বিল-সহ তথ্য কমিশনার পদে দুই সদস্যকে রাজ্যপাল সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পর নবান্নের সঙ্গে-রাজভবনে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, গত কয়েক মাস ধরেই রাজ্য সরকার ও রাজভবনের মধ্যে নানা বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিচ্ছিল, বিশেষত বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলগুলিতে রাজ্যপালের বিলম্বিত সম্মতি নিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.