‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ উদ্বেগের’! অনুদান বন্ধ নিয়ে ট্রাম্পের ঘোষণার পর বলল মোদী সরকার

ভারতে ভোটারদের ভোটমুখী করতে যে অনুদান দেওয়া হয়েছিল, তা বন্ধের কথা জানিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। শুধু তা-ই নয়, অনুদান বন্ধ নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যও ইতিমধ্যেই ভারতীয় রাজনীতিতে শোরগোল ফেলেছে। পাশাপাশি, বিশ্ব কূটনৈতিক মহলেও আলোড়ন তুলেছে। ট্রাম্পের ঘোষণা নিয়ে এ বার প্রতিক্রিয়া দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। শুক্রবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, বিষয়টি উদ্বেগজনক। গোটা বিষয় সংশ্লিষ্ট দফতর খতিয়ে দেখছে বলেও জানান বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেনের আমলে ভারতে ভোটারদের বুথমুখী করতে ১৮২ কোটি টাকা (২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার) অনুদান দিয়েছিল আমেরিকা। ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে সেই অনুদান বাতিল করে দেন। নিজের এই সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে গত বুধবার ট্রাম্প বলেন, “কেন আমরা ভারতে ভোটদানের হার বৃদ্ধি করতে ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার খরচ করব?” তাঁর দাবি, “আমার মনে হয়, কাউকে জেতানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা বিষয়টি ভারত সরকারকে জানিয়েছি।”

ট্রাম্পের এ হেন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ভারতে তো বটেই বিশ্ব কূটনৈতিক মহলেও হইচই পড়ে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তবে ভারতের নির্বাচনে নাক গলিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন? শুক্রবার সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনের সময় বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় রণধীরকে। এর জবাবে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘‘সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসনের তরফে তহবিল সম্পর্কিত কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, যা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।’’ তার পরই রণধীর জানান, ভারত সরকার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। পুরো বিষয়টি যাচাই না করে জনসমক্ষে মন্তব্য করা অনুচিত বলে মনে করেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।

গত রবিবার আমেরিকার সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতর ভারত-সহ একাধিক দেশে বরাদ্দ বাতিলের কথা জানায়। ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন এই দফতর জানায়, ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধি করতে আমেরিকা যে ১৮২ কোটি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়) দিয়েছিল, তা দেওয়া বন্ধ করা হচ্ছে। এই খবরে সিলমোহর দেন ট্রাম্প। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আমরা ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার কেন ভারতকে দিচ্ছি? ওদের অনেক টাকা আছে।’’ তার পরই মোদীর প্রসঙ্গ টেনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘ভারত এবং তাদের প্রধানমন্ত্রীকে আমি যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তাই বলে ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য ২.১০ কোটি ডলার!’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.