টানা ৪৩ দিন সন্ধে নামলেই বাড়ির টিনে উড়ে আসে ঢিল, আতঙ্ক জলপাইগুড়ির কোনপাকড়ি সরকার পাড়ায়

সন্ধে নামলেই বাড়ির টিনে উড়ে আসে ঢিল। কে কি উদ্দেশে ঢিল ছুড়ছে জানা নেই কারো। একটানা ৪৩দিন ধরে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের কোনপাকড়ি সরকার পাড়ার তিনটি বাড়িতে পাথরের ঢিল পড়ছে বলে অভিযোগ। কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানানোর পর ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ ও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা।

পুলিশের সামনে রাতের অন্ধকারে ঢিল পড়ছে বলে অভিযোগ। কিন্তু কোথা থেকে ঢিল ছোড়া হচ্ছে তা চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। ঢিলের আতঙ্কে সন্ধেয় পর ঘরবন্দি হয়ে পড়ছেন তিনটি পরিবারেত প্রায় ত্রিশজন সদস্য। বাড়ির শিশুদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। পাথরের ঢিলের আতঙ্কে হেলমেট পরে রাতে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা। রাতে শৌচাগারে যাচ্ছেন ছাতা ও হেলমেট পরে। বাড়ির উঠোনে ত্রিপল টাঙিয়ে রাখা হয়েছে পাথরের ঢিলের ভয়ে। ঘরের টিনের চালে জমে আছে বড় বড় পাথর। এক সময় বালি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন এলাকার লোকজন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ পেয়ে বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয় পুলিশ প্রশাসন। আপাতত বন্ধ রয়েছে যমুনা নদী থেকে বালি পাচার।

বালির বদলা নিতে পাথর ছোড়ার ঘটনা কি না, তা বুঝে উঠতে পারছেন না সরকার পাড়ার বাসিন্দারা। সোমবার এলাকায় পৌঁছোয় জাতীয় মানবাধিকার পর্ষদের প্রতিনিধি নীহার মজুমদার। এ দিন তিনি গ্রামবাসী ও আতঙ্কগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “এভাবে চলতে পারে না। এই তিনটি পরিবার খুবই সমস্যায় আছেন। ঢিল গুলো আসছে পশ্চিম দিক থেকে। আমরা পুলিশকে পরিবারের সমস্যা কথা লিখিতভাবে জানাবো।”

এদিকে আতঙ্কগ্রস্ত পরিবারের সদস্যা টুম্পা রায় বলেন, “খুব ভয়ে ও আতঙ্কে দিন রাত কাটছে। রাতে ঘুমাতে পারি না পাথরের ঢিলের ভয়ে। বাচ্চাদের পড়াশোনা হচ্ছে না। এখন একমাত্র ভরসা পুলিশ। পুলিশ আশাকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

এদিকে স্থানীয় এলাকা তথা গড়ালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গিরিবালা রায়কে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও একবারও এলাকায় পৌঁছে গ্রামবাসীদের সমস্যা শোনেননি বলে অভিযোগ। প্রধান সাফাই দিয়ে বলেন, আমি দিন কয়েক আগে অভিযোগ পেয়েছি। আমার স্বামী ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। সেই সময় ঢিল পড়ছে। এই বলে ব্যক্তিগত পারিবারিক সমস্যার কারণ দেখিয়ে গ্রামবাসীদের সমস্যা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন।” এতদিন থেকে তিনটি পরিবার সমস্যায় পড়ছেন। তারপরেও ঘটনাস্থলে প্রধান না যাওয়ায় উঠছে প্রশ্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.