ভারতের পড়শি দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে! শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট। গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের পশ্চিমাংশে ওই দুর্ভিক্ষের অভিঘাত সবচেয়ে প্রবল হবে বলে রাষ্ট্রপুঞ্জ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-র ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
ঘটনাচক্রে, ওই প্রদেশে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস। ফলে বাংলাদেশ এবং ভারতের উপর শরণার্থীদের চাপ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। গৃহযুদ্ধের কারণে ইতিমধ্যেই কৃষির উৎপাদন তলানিতে ঠেকেছে মায়ানমারে। সেই সঙ্গে দ্রুত বাড়ছে মূল্যবৃদ্ধি। এই পরিস্থিতিতে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হলে বহু মানুষের প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইউএনডিপি জানিয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ দূত জুলি বিশপ মায়ানমারের পরিস্থিতি পরিদর্শনের পর গত ৩০ অক্টোবর সাধারণ পরিষদের মানবাধিকার কমিটিকে যে রিপোর্ট পেশ করেছিলেন, তাতে ক্ষমতার রক্তাক্ত পালাবদল ঘটার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। এ বার রিপোর্টে উঠে এল দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার কথা। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন ১০২৭’।
পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয় ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ), পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। ইতিমধ্যেই মায়ানমারের ৫০ শতাংশের বেশি অংশ বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলির একাংশ জানিয়েছে। বস্তুত, রাজধানী নেপিডো, প্রধান শহর ইয়াঙ্গন এবং আরও কিছু বড় জনপদ-শিল্পাঞ্চলেই এখন জুন্টা সমর্থক সেনার গতিবিধি সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে খবর। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজ়োরামেও শরাণার্থী অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।