ছেলেকে কোলে নিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ বাবার! পূর্ব বর্ধমানে গিয়ে কেন চরম সিদ্ধান্ত মুর্শিদাবাদের যুবকের?

ছেলেকে কোলে নিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন বাবা! শুক্রবার সন্ধ্যায় পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া আজিমগঞ্জ লাইনে বাঁদরা রেলগেটের কাছে এক যুবক ও তাঁর সন্তানের ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। প্রথমে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি। তার পর মৃত যুবকের জামার পকেট থেকে একটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে শনিবার পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম শুভঙ্কর মণ্ডল (৩০) এবং ওঙ্কার মণ্ডল (৬)। বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ থানার রামরাজাপুর এলাকায়। বৈদ্যুতিন সামগ্রী মেরামতের মিস্ত্রি ছিলেন শুভঙ্কর। পারিবারিক অশান্তির জেরে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুলিশের।

শনিবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে দেহ দু’টির ময়নাতদন্ত করানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভঙ্করেরা দুই ভাই। দাদা দীপঙ্কর পুলিশে চাকরি করেন। এ ছাড়া বাড়িতে রয়েছেন বিধবা মা, স্ত্রী মধুমিতা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল প্রায় সাড়ে ১০টা নাগাদ ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসেছিলেন শুভঙ্কর। তার আগে স্ত্রীর সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে শুভঙ্করের অশান্তি হয়েছিল। বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার পর আর বাড়ি ফেরেননি। তার পর অনেক রাতে বাড়িতে তাঁদের মৃত্যুর খবর ফোন করে জানানো হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর নাগাদ ছেলেকে নিয়ে কাটোয়া স্টেশনে নেমেছিলেন শুভঙ্কর। তার পর ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে একটি হোটেলে খেতে গিয়েছিলেন। বাবা-ছেলে একসঙ্গে করেন। বিকেল ৩টে নাগাদ রেললাইন ধরে ছেলেকে নিয়ে আজিমগঞ্জের দিকে তাঁকে হেঁটে যেতে দেখেন কয়েক জন। বাবার পিছনেই হেঁটে যাচ্ছিল ছোট্ট ওঙ্কার। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর পৌনে ৪টে নাগাদ কাটোয়া আজিমগঞ্জ আপ লোকাল কাটোয়া স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় ওই ট্রেনের সামনেই ছেলেকে কোলে নিয়ে ঝাঁপ দিতে দেখা যায় শুভঙ্করকে। খবর পেয়ে শনিবারই প্রতিবেশী ও আত্মীয়েরা হাসপাতালে আসেন দেহের ময়নাতদন্তের সময়। স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির কারণ নিয়ে তাঁরা অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.