ইংলিসের কাছে হার ইংল্যান্ডের, চ‍্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রেকর্ড রান তাড়া করে জয়ী অস্ট্রেলিয়া

আইসিসি প্রতিযোগিতায় অস্ট্রেলিয়া যে কতটা ভয়ঙ্কর তা দেখল ইংল্যান্ড। ‘ভাঙাচোরা’ দল নিয়েও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রেকর্ড রান তাড়া করে জিতল তারা। ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার যে দল এক দিনের বিশ্বকাপ জিতেছিল সেই দলের ছয় ক্রিকেটার নেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। পুরো বোলিং আক্রমণই নতুন। তার উপর পাহাড়প্রমাণ রানের চাপ। দেখে মনে হচ্ছিল, সেই চাপে ভেঙে পড়বে অস্ট্রেলিয়া। তা হল না। তরুণ জস ইংলিস এক দিনের কেরিয়ারে নিজের প্রথম শতরান করলেন। নজর কাড়লেন ম্যাথু শর্ট। ভাল খেললেন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মার্নাস লাবুশেন ও অ্যালেক্স ক্যারেও। শেষ দিকে ঝোড়ো ইনিংস খেললেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এই পাঁচ ব্যাটারের ব্যাটে ১৫ বল বাকি থাকেই ৩৫২ রান তাড়া করে জিতল অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচেই প্রথম ইনিংসে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বাধিক রান করেছিল ইংল্যান্ড। সেই রান বাঁচাতে পারল না বোলিং ব্রিগেড। হেরে মাঠ ছাড়তে হল তাদের।

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। লাহোরের মাঠে ইংরেজ ওপেনার ফিল সল্ট মাত্র ১০ রানে আউট হন। অ্যালেক্স ক্যারের দুরন্ত ক্যাচে ফেরেন তিনি। তিন নম্বরে জেমি স্মিথও রান পাননি। দুই উইকেট পড়ার পর ইংল্যান্ডের ইনিংস সামলান ডাকেট ও জো রুট। পরের ২৫ ওভার ব্যাট করেন বেন ডাকেট ও জো রুট। ১৫৮ রানের জুটি বাঁধেন। সেখানেই খেলায় পিছিয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। দেখে মনে হচ্ছিল দুই ব্যাটারই শতরান করবেন। ডাকেট শতরান করলেও রুট পারেননি। ৬৮ রান করে ফেরেন তিনি। ভারতের বিরুদ্ধে শেষ এক দিনের ম্যাচে চোট পেয়েছিলেন ডাকেট। তাঁর খেলা নিয়ে সংশয় ছিল। তিনি শুধু খেললেন না, ইংল্যান্ডের রেকর্ডের পথে নিজের রেকর্ডও করলেন।

নিয়মিত ব্যবধানে ইংল্যান্ডের উইকেট পড়লেও এক দিকে ছিলেন ডাকেট। দেখে মনে হচ্ছিল দ্বিশতরান করবেন। কিন্তু ১৬৫ রান করে মার্নাশ লাবুশেনের বলে রিভার্স সুইপ মারতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রেকর্ড গড়েন ডাকেট। এই প্রতিযোগিতায় একটি ইনিংসে এটি কোনও ব্যাটারের করা সর্বাধিক রান। ২১ বছর আগের রেকর্ড ভেঙেছেন ডাকেট। ২০০৪ সালে আমেরিকার বিরুদ্ধে ১৪৫ রান করেছিলেন নিউ জ়িল্যান্ডের নেথান অ্যাস্টল। সেই রেকর্ড ভেঙে যায়। ইংল্যান্ডের ইনিংসের শেষ দিকে হাত খোলেন জোফ্রা আর্চার। ১০ বলে ২১ রান করেন তিনি। অনিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন অস্ট্রেলিয়ার বোলারেরা। অতিরিক্ত হিসাবে ২৩ রান দেন তাঁরা। ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৫১ রান করে ইংল্যান্ড।

জবাবে রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ট্রেভিস হেড আউট হন ৬ রানে। ৫ রানে ফেরেন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। যে দুই ব্যাটারের উপর দলের ভরসা ছিল তাঁরা রান পাননি। তার পরেও লড়াই ছাড়েনি অস্ট্রেলিয়া। উইকেট পড়লেও রান তোলার গতি কমেনি। ওপেনার শর্ট ও লাবুশেন জুটি বাঁধেন। ৯৫ রান যোগ করেন তাঁরা। ৪৭ রান করে ফেরেন লাবুশেন। ৬৩ রান করে আউট হন শর্ট।

পর পর দু’উইকেট পড়ায় আবার চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেথান থেকে দলকে টেনে তোলেন ইংলিস ও ক্যারে। লাহোরের মাঠে শিশির পড়ছিল। ফলে বল গ্রিপ করতে সমস্যা হচ্ছিল মার্ক উড, আদিল রশিদদের। সেই সুবিধা কাজে লাগান দুই অসি ব্যাটার। উইকেটের চার দিকে শট মারেন তাঁরা। প্রতি ওভারে বড় শট আসছিল। ফলে রান তোলার গতি কমেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.