সুজিতের দফতর-সহ কলকাতার ১৩ জায়গায় তল্লাশিতে বাজেয়াপ্ত বহু নথি, ৪৫ লক্ষ টাকা! জানাল ইডি

কলকাতা এবং আশপাশের ১৩ জায়গায় শুক্রবার তল্লাশি চালিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই নিয়ে শনিবার রাতে সমাজমাধ্যমে পোস্ট দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তারা জানাল, যে ১৩টি জায়গায় শুক্রবার তারা তল্লাশি চালিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর দফতর এবং সংস্থা। শহরের ১৩টি জায়গায় তল্লাশিতে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে নগদ ৪৫ লক্ষ টাকা এবং নথিপত্র। সেই নগদ নিয়ে কোনও ‘ব্যাখ্যা মেলেনি’। তবে ওই টাকা কোথা থেকে মিলেছে, তা স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি ইডি। সুজিতের দফতর বা সংস্থা থেকে কোনও টাকা আটক করা হয়েছে কি না, বা করলে কত পরিমাণে, তারও কোনও উল্লেখ ইডির বক্তব্যে নেই।

সমাজমাধ্যমে শনিবার বিবৃতি দিয়ে ইডি জানিয়েছে, শুক্রবার কলকাতা এবং আশপাশের ১৩টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে তারা। পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। যে জায়গাগুলিতে তল্লাশি চালানো হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিতের দফতর এবং সংস্থা। ১৩ জায়গায় তল্লাশির সময়ে বেশ কিছু ‘অপরাধমূলক’ নথি, যার মধ্যে রয়েছে সম্পত্তি সংক্রান্ত নথি এবং ডিজিটাল নথি, ৪৫ লক্ষ টাকা নগদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই নগদের ‘ব্যাখ্যা মেলেনি’। এই নগদ কোন কোন জায়গা থেকে মিলেছে, তা নিয়ে কিছু জানায়নি ইডি। নথিগুলি কোথা থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তা নিয়েও কিছু স্পষ্ট করেনি ইডি।

শুক্রবার সকাল থেকে তল্লাশি চলেছে কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গায়। তল্লাশি চলেছে সল্টলেক সেক্টর ওয়ানের একটি ভবনে। ওই ভবনেই রয়েছে সুজিতের দফতর। ইডি সূত্রে খবর, নাগেরবাজার এলাকায় এক বাড়িতে তল্লাশি চলে। ঠনঠনিয়ার একটি বাড়িতেও গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। তল্লাশি চলেছে শরৎ বোস রোড, নিউ আলিপুরের বেশ কয়েকটি ঠিকানায়। বেলেঘাটায় এক চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং নাগেরবাজারে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, মন্ত্রীর পুত্রের ধাবাতেও তল্লাশি চলেছে। অভিযান চলেছে একটি রেস্তরাঁ এবং অডিটরের দফতরেও।

এর আগে ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তেই লেকটাউনে সুজিতের দু’টি বাড়ি এবং দফতরে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। ১৪ ঘণ্টা তল্লাশির পর বেশ কিছু নথি এবং সুজিতের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে বেরিয়ে যান তদন্তকারীরা।

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ব্যবসায়ী অয়ন শীলকে প্রথম গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে তাঁর সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালাতে গিয়ে উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট। সেখান থেকেই পুরসভার নিয়োগেও দুর্নীতির হদিস পান তদন্তকারীরা। অয়নের সংস্থা পুর নিয়োগের ক্ষেত্রে ওএমআরের দায়িত্বে ছিল। তদন্তে নেমে একে একে আরও অনেককে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। পরে এই মামলায় অবৈধ ভাবে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তে নামে ইডিও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.