সুপার কাপের সেমিফাইনালে উঠতে ড্র যথেষ্ট ছিল ইস্টবেঙ্গলের। অন্য দিকে মোহনবাগানকে জিততেই হত। শুক্রবার গোয়ার মাঠে ডার্বি গোলশূন্য ড্র হল। গোটা প্রথমার্ধ জুড়ে দাপট দেখাল ইস্টবেঙ্গল। ভাগ্য ভাল থাকলে এগিয়েও যেতে পারত তারা। দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগান বেশি আক্রমণ করলেও গোল করতে পারল না। ড্র করে গোলপার্থক্যে সুপার কাপের সেমিফাইনালে উঠে গেল লাল-হলুদ। সুপার কাপে ব্যর্থ হওয়ায় চাপ আরও বাড়ল হোসে মোলিনার উপর। মোহনবাগান যা খেলল, তাতে তাঁর পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। যে ম্যাচে জিততেই হবে সেই ম্যাচে আক্রমণের কোনও পরিকল্পনাই দেখা গেল না বাগানের খেলায়। ফলে যা হওয়ার তা-ই হল।
যে ম্যাচে জিততেই হবে সেই ম্যাচে শুরু থেকে এক স্ট্রাইকারে খেলতে নামে মোহনবাগান। জেমি ম্যাকলারেন একাই সামনে ছিলেন। তাঁকে বোতলবন্দি করে রেখেছিল লাল-হলুদ রক্ষণ। জেসন কামিংস, দিমিত্রি পেত্রাতোস, রবসন রোবিনহোদের নামালেন না তিনি। উল্টোদিকে ইস্টবেঙ্গলের খেলায় বৈচিত্র চোখে পড়ছিল। দুই প্রান্ত ধরে ক্রমাগত আক্রমণে উঠছিল তারা। মাঝমাঠে রশিদ ও মিগুয়েল ফিগুয়েরা ভাল খেলছিলেন। বিশেষ করে মিগুয়েল বার বার বাগান বক্সে বল তুলছিলেন। ২৪ মিনিটের মাথায় মিগুয়েলের ক্রসে হেড করেন বিপিন সিংহ। বল বারে লেগে বেরিয়ে যায়। নইলে এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল।
চাপে পড়েও পরিকল্পনা বদলালেন না মোলিনা। মোহনবাগানের খেলা মাঝমাঠেই শেষ হয়ে যাচ্ছিল। তার মাঝেই দু’এক বার প্রতিআক্রমণে ওঠে তারা। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক প্রভসুখন গিলকে প্রথমার্ধে তেমন বল ধরতেই হয়নি। উল্টোদিকে বিশাল কাইথকে প্রথমার্ধে কয়েক বার কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। যদিও তাঁকে পরাস্ত করতে পারেননি লাল-হলুদ স্ট্রাইকারেরা। বিরতির ঠিক আগে মিগুয়েলের জোরালো শট প্রতিহত করেন বিশাল। গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দু’দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আক্রমণের ঝাঁজ কিছুটা বাড়ায় মোহনবাগান। ফলে সুযোগ পেতে থাকে তারা। ইস্টবেঙ্গল কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে। তবে তার মাঝেই বক্সের মধ্যে অরক্ষিত অবস্থায় বল পান হামিদ। সামনে একা গোলরক্ষক বিশাল ছিলেন। সেখান থেকেও গোল করতে পারেননি হামিদ। বিশাল বল বাঁচিয়ে দেন। গোল পেতে কামিংস, পেত্রাতোস, রবসনকে নামান মোলিনা।
বিদেশিরা নামার পর বাগানের আক্রমণ আরও কিছুটা বাড়ে। ভাল সুযোগ পেয়েছিলেন কামিংস। তাঁর শট আটকে যায়। ফিরতি বল পান রবসন। তাঁর শটও বার উঁচিয়ে বেরিয়ে যায়। ম্যাচে সেটাই মোহনবাগানের সবচেয়ে ভাল সুযোগ ছিল। খেলা যত গড়াচ্ছিল, তত রক্ষণ জমাট করছিলেন ব্রুজ়ো। কারণ, তিনি জানতেন, ড্র করলেই নক আউটে চলে যাবেন। ফলে গোল করতে আরও সমস্যায় পড়ে বাগান। শেষ পর্যন্ত ড্র করে বিদায় নিতে হয় মোলিনার দলকে।

