মোহনবাগান অতীত। সামনে এ বার ডায়মন্ড হারবার এফসি। ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালের আগে ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজ়োর চিন্তা অবশ্য কার্ড সমস্যা। যদিও প্রতিপক্ষকে হালকা ভাবে নেওয়ার উপায় নেই। ডায়মন্ড হারবারের কোচ কিবু ভিকুনা কলকাতা ময়দানের পোড় খাওয়া কোচ। মোহনবাগান কোচ হিসাবে ইস্টবেঙ্গলের মহড়া নেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।
ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান লড়াইয়ের উন্মাদনা আলাদা। এক সময় কলকাতা ডার্বির বন্ধনীতে প্রবল ভাবে ছিল মহমেডান স্পোর্টিংও। ময়দানের তিন প্রধানের টান টান লড়াইয়ের সেই যুগ আর নেই। নতুন শক্তির হিসাবে উঠে এসেছে ডায়মন্ড হারবার এফসি। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল এখনও হয়তো ডার্বির বন্ধনীতে জায়গা করে নিতে পারেনি, তবু হেলাফেলা করার মতো নয় একেবারেই।
ডুরান্ড কাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মোহনবাগানের কাছে ৫ গোল খেলেও জামশেদপুর এফসির মতো দলকে তাদের মাঠে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে ডায়মন্ড হারবার। সেই দলের মুখোমুখি হওয়ার আগের দিন ইস্টবেঙ্গল কোচ বললেন, ‘‘ডার্বি অতীত। ওই ম্যাচ নিয়ে আর ভাবছি না। আমাদের লক্ষ্য একটাই। সেমিফাইনাল জিতে ফাইনালে উঠতে হবে।’’ ব্রুজ়োর চোখ ফাইনালে হলেও মেনে নিচ্ছেন প্রতিপক্ষ হিসাবে ডায়মন্ড হারবার বেশ কঠিন। তিনি বলেছেন, ‘‘সেমিফাইনালে কঠিন ম্যাচ হবে। ডায়মন্ড হারবারও সেমিফাইনাল জিতে ফাইনালে যেতে চাইবে। ওদের দল বেশ ভাল। নক আউট পর্বের ম্যাচ আলাদা। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সেমিফাইনালে কার্ড দেখলে চলবে না।’’
মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হলুদ কার্ড দেখেছিলেন সাউল ক্রেসপো, দিমিত্রি দিয়ামানতাকোস, মিগুয়েল ফিগুয়েরা, মহম্মদ রাকিপ, লালচুংনুঙ্গা। দল ফাইনালে উঠলে এবং এঁদের কেউ আবার কার্ড দেখলে ফাইনালে সমস্যা হবে। তাই ফুটবলারদের সতর্ক থাকার কথা বলেছেন ব্রুজ়ো। তাঁর আশা সমর্থকদের আরও একটা জয় উপহার দিতে পারবে তাঁর দল।
সামনে ইস্টবেঙ্গল বলে গুটিয়ে নেই প্রথম বার ডুরান্ডের শেষ চারে ওঠা ডায়মন্ড হারবার শিবির। ডার্বি জেতার পর পয়েন্ট হারানো নতুন কিছু নয়। ডার্বি জয় অনেক সময় ফুটবলারদের মধ্যে একটা গাছাড়া মনোভাব তৈরি করে। যা বিলক্ষণ জানেন ভিকুনা। বুধবারের ম্যাচে সেই সুযোগ নিতে চান তিনি। ব্রাজিলীয় ক্লেটন সিলভেইরার চোট ছাড়া তেমন বড় সমস্যা নেই গত বার আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশন চ্যাম্পিয়নদের। কোয়ার্টার ফাইনালেও সিলভেইরাকে পাননি ভিকুনা। তাই যাঁরা আছেন, তাঁদের নিয়েই ইস্টবেঙ্গলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চান ডায়মন্ড হারবার কোচ।
দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ভিকুনা ম্যাচের আগের দিন বলেছেন, ‘‘নিঃসন্দেহে খুব কঠিন ম্যাচ হতে চলেছে। আমরা সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। ডুরান্ডে আমরা তিনটে ম্যাচ জিতেছি, একটা হেরেছি। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গেও লড়াই করব। ইস্টবেঙ্গল অবশ্যই খুব ভাল দল। আমাদের দলও কিন্তু খারাপ নয়। জামশেদপুরকে ওদের মাঠে গিয়ে হারিয়েছি আমরা। সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছি। আরও এগোতে চাই আমরা।’’ ডায়মন্ড হারবার শিবিরের সবচেয়ে বড় সুবিধা, তাদের কিছু হারানোর নেই।
ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ডায়মন্ড হারবার ডুরান্ডের ফাইনালে পৌঁছাতে পারে কিনা, তা জানা যাবে বুধবার। যুবভারতীর গ্যালারি নিশ্চিত ভাবে ভরাবেন লাল-হলুদ সমর্থকেরা। উল্টোদিকের গ্যালারি এক দম ফাঁকা কিন্তু থাকবে না। এই ম্যাচ এখনও ডার্বির বন্ধনীতে না ঢুকলেও কলকাতা ময়দানের নানা সমীকরণে গ্যালারি ফাঁকা না-ও থাকতে পারে।