দুর্গাপুরকাণ্ড: ধৃত সহপাঠী-বন্ধুর হস্টেলের ঘর থেকে মিলল ১১টি কন্ডোম! আরও একটি পাওয়া গেল জঙ্গলের ঘটনাস্থল থেকে

দুর্গাপুরে ‘নির্যাতিতা’ ডাক্তারি ছাত্রীর সহপাঠী-বন্ধুকে নিয়ে রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। লাগাতার জেরার পরেও তিনি যে সন্দেহের ঊর্ধ্বে নন, তা আগেই জানিয়েছিলেন দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধরি। পরে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে থাকা সেই সহপাঠীকে জেরা করে এবং তাঁর হস্টেলে তল্লাশি চালিয়ে কন্ডোম উদ্ধার করলেন তদন্তকারীরা। শুধু যুবকের হস্টেলের ঘর থেকেই নয়, জঙ্গলের যে জায়গায় তরুণী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ, সেই জায়গা থেকেও একটি কন্ডোম মিলেছে বলে খবর মিলল পুলিশ সূত্রে।

মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন ওই সহপাঠী-বন্ধু। বুধবার তাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক তাঁকে সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এর পর বৃহস্পতিবার সকালে যুবককে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, সেখানেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গণধর্ষণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে যে পাঁচ জনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাঁদের এবং ‘নির্যাতিতা’র বয়ানের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় সহপাঠীর বয়ান। কারণ, মূলত বয়ানে অসঙ্গতির কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই কারণেই বার বার তাঁর বয়ান যাচাই করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

ঘটনাস্থলটি ক্যাম্পাসের প্রায় পাঁচশো মিটারের মধ্যে। পাকা রাস্তা থেকে একটি মাটির রাস্তা বেরিয়ে গিয়েছে সেখানে। প্রায় একশো ফুট এগিয়ে দু’ভাগ হয়েছে। সেখান থেকেই জঙ্গলের শুরু। বাঁ দিকের সামান্য চওড়া রাস্তা গিয়েছে একটি শ্মশান ও মন্দিরের দিকে। সঙ্কীর্ণ রাস্তাটি গিয়েছে গ্রামে। সে রাতে ওই সঙ্কীর্ণ রাস্তাতেই অপরাধের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্র জানিয়েছে, গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পরেই ঘটনাস্থলটি ঘিরে ফেলা হয়েছিল তদন্তের নিয়ম মেনে। বৃহস্পতিবার সেই ঘেরা এলাকাই আর খানিকটা বিস্তৃত করা হয়েছে। আরও ৫০ মিটার এলাকা ঘেরা হয়েছে।

তা হলে কি তদন্তে নতুন কিছু উঠে এসেছে? এ বিষয়ে অবশ্য তদন্তকারীরা এখনই মুখ খুলতে চাননি। ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ফরেন্সিক দলকেও। সূত্রের খবর, তারাও নমুনা সংগ্রহ করে। সেই সময়েই একটি কন্ডোম উদ্ধার হয়। যদিও সেটি অব্যবহৃত অবস্থায় মিলেছে। ঘটনাস্থল ছাড়াও ধৃত সহপাঠীর হস্টেলের ঘর থেকে মোট ১১টি কন্ডোম পাওয়া গিয়েছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে।

প্রায় গোড়া থেকেই এই সহপাঠীকে ধরার দাবি জানিয়ে আসছিলেন নির্যাতিতার বাবা। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, ওই যুবক মালদহের বাসিন্দা। তাঁর বাবা কংগ্রেসের নেতা এবং পঞ্চায়েতের সদস্যও। তাঁদের নির্মাণ সামগ্রী, মাছ এবং আমের ব্যবসা রয়েছে বলে খবর স্থানীয় সূত্রে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.