তীব্র দাবদাহে জেলার মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা, তার সঙ্গে পানীয় জলের অভাব বিভিন্ন এলাকায়। পানীয় জল না পেয়ে ক্ষুব্ধ গ্ৰামবাসীরা হাঁড়ি কলসি নিয়ে অবরোধ বিক্ষোভ শুরু করেন মেজিয়ার অর্ধগ্ৰামে।
গতকাল জেলার তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। এই অবস্থায় সংকট দেখা দিয়েছে পানীয় জলের। তাই পানীয় জলের দাবিতে হাঁড়ি কলসি ও বালতি রাস্তায় রেখে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনা ঘটেছে বাঁকুড়ার বিভিন্ন গ্রামে। জলের দাবিতে আজ মেজিয়ার অর্ধগ্রামের বাসিন্দারা দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ করেন। অন্যদিকে ধমক ও হুমকি দিয়ে এই অবরোধকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বলে অভিযোগ। একসময় অবরোধকারীরা নাছোড়বন্দা হয়ে ওঠেন এবং তৃণমূল নেতাদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এই ঘটনা শুনে তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতারা।
প্রবল গরমে নাভিশ্বাস ওঠার দশা জেলার মানুষের। পাল্লা দিয়ে নামছে ভূগর্ভস্থ জলস্তর। ফলে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে জলসঙ্কট। প্রায় প্রতিদিনই জেলার কোথাও না কোথাও পানীয় জলের দাবিতে অবরোধ বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে। এবার সেই বিক্ষোভ আছড়ে পড়ল বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকের অর্ধগ্রামে। গ্রামের মন্ডল পাড়া, দত্ত পাড়া, ঘোষ পাড়া সহ বেশ কয়েকটি পাড়ায় এদিন সকাল থেকে দফায় দফায় রাস্তায় হাঁড়ি কলসি রেখে অবরোধ শুরু করেন বাসিন্দারা। স্থানীয়দের দাবি, গ্রামের অধিকাংশ নলকূপের জল দূষিত ও পানের অযোগ্য। কুয়োগুলিতেও জলের স্তর নেমে গেছে। নলবাহিত পানীয় জল এখনো গ্রামে পৌঁছায়নি। এই পরিস্থিতিতে গ্রামজুড়ে শুরু হয়েছে পানীয় জলের তীব্র হাহাকার।
এদিকে গ্রামবাসীদের অবরোধ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে অবরোধস্থলে পৌঁছে যান তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। অবরোধকারীদের কার্যত ধমক চমক দিয়ে অবরোধ তুলতে গেলে তৃণমূলের গড় হিসাবে পরিচিত অর্ধগ্রাম এলাকার মানুষ প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বকে কার্যত ঘেরাও করে তারা। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি পানীয় জল সরবরাহের সবরকম চেষ্টা চলছে। আন্দোলনকারীদের কোনোরকম ধমক দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
বিজেপি নেতা চিত্তরঞ্জন রায়ের কটাক্ষ, জল সমস্যা সমাধান না করে তৃণমূল নেতারা মানুষকে ধমক দিয়ে আন্দোলন স্তব্ধ করতে চাইছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ এর জবাব দেবে।
এর প্রত্যুত্তরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জন্মেজয় বাউরি বলেন, মিথ্যা অভিযোগ। জল সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে এখানের বেসরকারি কিছু সংস্থাকে দিয়ে ট্যাংকারে করে পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছি বিগত বছর গুলিতে। এবারও সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাছাড়াও খুব তাড়াতাড়ি পিএইচই দপ্তরের নলবাহিত জল এসে গেলে আর সমস্যা থাকবে না।