যা করতে হয় করুন! বৈঠকে চার শীর্ষ সেনাকর্তাকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়ে দিলেন মোদী, ছিলেন রাজনাথ এবং ডোভালও

পহেলগাঁও হামলার জবাব কী ভাবে দেওয়া হবে, কোন সময়, কোন লক্ষ্যে আঘাত হানা হবে, তা স্থির করবে ভারতীয় সেনাবাহিনীই। মঙ্গলবার নিজের বাসভবনে জরুরি বৈঠকে বসে সেনাবাহিনীকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এমনটাই বলছে সূত্র। পিটিআই জানিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর তাঁর আস্থা রয়েছে বলেও বৈঠকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার বিকেলে ৭, লোককল্যাণ মার্গের বাসভবনে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, তিন বাহিনীর প্রধান (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান, সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নৌসেনার প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী, এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিংহ। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা নিয়ে নিজের কড়া মনোভাব স্পষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যখন এই বৈঠক চলছিল, সে সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পরে তাঁর বাসভবনে যান শাহ। সঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত ছিলেন বলে খবর।

সূত্র বলছে, মঙ্গলবারের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দেশের সেনাবাহিনীর শক্তিতে আস্থা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পহেলগাঁও হামলার জবাব দিতে কোন লক্ষ্যে, কী ভাবে, কখন আঘাত করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে সেনাবাহিনী। এর আগে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানেও কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মোদী। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি আবার ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ করতে পারে সেনাবাহিনী। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। তার পরে পাকিস্তানের বালাকোটে প্রবেশ করে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছিল ভারতীয় সেনা। পাক সেনার মদতে ওই শিবিরগুলি চালাচ্ছিল জইশ-এ-মহম্মদ। পহেলগাঁও হামলার পরে সেই ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর পুনরাবৃত্তি হবে কি না, প্রশ্ন উঠেছিল। এ বার প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে হামলার জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দেওয়ার পরে সেই জল্পনাই আরও জোরালো হল।

২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। প্রথমে এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল জঙ্গিগোষ্ঠী ‘লশকর-এ-ত্যায়বা’র ‘ছায়া সংগঠন’ টিআরএফ। যদিও পরে দায় অস্বীকার করে তারা। ভারত আঙুল তুলেছে পাকিস্তানের দিকে। ইতিমধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কিছু কড়া পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাকিস্তানিদের স্বল্পমেয়াদী ভিসা এবং মেডিক্যাল ভিসা বাতিল করা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী ভিসা বাতিল করা হয়নি। সিন্ধুচুক্তিও বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। পহেলগাঁও কাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ। জম্মু ও কাশ্মীরে কড়া প্রহরা মোতায়েন হয়েছে। এই আবহে সোমবারই প্রধানমন্ত্রীকে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে অবহিত করেন রাজনাথ। মঙ্গলবার নিজের বাড়িতে ফের বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী। তার পরেই জোরালো হচ্ছে ‘প্রত্যাঘাত’-এর জল্পনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.