ভোরের আলো তখনও ভাল করে ফোটেনি। হঠাৎ কেঁপে উঠল বাড়িঘর, রাস্তাঘাট সর্বত্র! আতঙ্কে অনেকেই ঘুম থেকে উঠে ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন! বুধবার ভোরে এমনই অভিজ্ঞতা হল দিল্লি এবং তার সংলগ্ন এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষের। আফগানিস্তানের ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানী। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৬।
ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টারের (ইমএসসি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার ভোর ৪টে ৪৪ মিনিট নাগাদ (ভারতীয় সময়) কম্পন অনুভূত হয় আফগানিস্তানে। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল আফগানিস্তানের বাঘনাল থেকে ১৬৪ কিলোমিটার পূর্বে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার গভীরে। আফগানিস্তানে হওয়া ভূমিকম্পের রেশ দিল্লিতে অনুভূত হয়েছে বলে সমাজমাধ্যমে দাবি করেন অনেকে।
আফগানিস্তান প্রায়ই কেঁপে ওঠে ভূমিকম্পে। ঘন ঘন কম্পনে আতঙ্কে থাকেন সে দেশের মানুষ। গত ২১ মার্চও আফগানিস্তান কেঁপে উঠেছিল ভূমিকম্পে। সেই সময় কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫। তার আগে ১৩ মার্চও ভূমিকম্প হয় সেই দেশে। তবে কম্পনের মাত্রা ছিল তুলনামূলক কম। উল্লেখ্য, আফগানিস্তান একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। হিন্দুকুশ পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত এই দেশ বার বারই কেঁপে ওঠে ভূমিকম্পে। বুধবার আফগানিস্তানে ভূমিকম্প হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে কম্পন অনুভূত হয় ফিলিপিন্সে। সেখানেও কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৬।
গত কয়েক দিনের মধ্যে এশিয়ার কয়েকটা দেশে ভূমিকম্প হয়। সপ্তাহ দুই আগে পর পর দু’বার জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ভারতের পড়শি দেশ মায়ানমার। রিখটার স্কেলে প্রথমটির কম্পনের মাত্রা ৭.৫ এবং দ্বিতীয়টির মাত্রা ৭ বলে জানিয়েছিল ভারতের ভূকম্প পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি। কম্পন অনুভূত হয় দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অংশে। মৃদু কম্পন টের পাওয়া যায় কলকাতাতেও। সেই ভূমিকম্পের জেরে মায়ানমারে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৩,০০০। ঘরছাড়া হন অনেকে। প্রভাব পড়েছিল প্রতিবেশী তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককেও। গত ৪ এপ্রিলও দিল্লি কেঁপে উঠেছিল। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানায়, ভূমিকম্পের উৎসস্থল নেপালে মাটির নীচে ২০ কিলোমিটার গভীরে।