ওয়েনাড়ে মৃতের সংখ্যা ১৪০ ছাড়াল, বুধে বন্ধ স্কুল-কলেজ, ভারী বৃষ্টি বাধা হতে পারে উদ্ধারকাজে

একই দিনে মাত্র চার ঘণ্টায় পর পর তিন বার ধস। কেরলের ওয়েনাড়ের চেনা পাহাড়ি এলাকার ছবি নিমেষে পাল্টে যায়। এখন শুধু পাহাড়ি এলাকা কাদামাটি ঢাকা বধ্যভূমি। মঙ্গলবার সকাল থেকে সেই এলাকায় চলছে উদ্ধারকাজ। বাড়িঘর, দোকানের নীচে চাপা পড়ে থাকা বাসিন্দাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারী দল। নামানো হয়েছে সেনা। কিন্তু দুর্যোগের আশঙ্কা এখনই কাটছে না বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। আগামী ৪৮ ঘণ্টা কেরলের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। উদ্ধারকারী দলকে সেই দুর্যোগ মাথায় নিয়েই উদ্ধারকাজ চালাতে হবে।

ওয়েনাড়ের মেপ্পাড়ি এলাকায় ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ১৪৩ জনের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনও আটকে অনেকে। শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এ দিকে, বিপর্যস্ত ওয়েনাড়ের উপর থেকে এখনই বিপদ কাটছে না।

মৌসম ভবন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওয়েনাড় এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। সেই সঙ্গে ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে ওয়েনাড়ের উপর দিয়ে। কোথাও কোথাও সেই হাওয়ার গতিবেগ ৫০ কিলোমিটার প্রতিঘণ্টাতে পৌঁছতে পারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আবহাওয়ার এই প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য উদ্ধারকাজে সমস্যা হতে পারে।

দুর্যোগ এবং ভারী বৃষ্টির সতর্কতার কারণে কেরলের বিভিন্ন জেলায় বুধবার বন্ধ থাকবে সব স্কুল, কলেজ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বৃহস্পতিবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে বলে সরকারি সূত্রে খবর। রাজ্যে দু’দিনের শোক পালনের ডাক দিয়েছে পিনারাই বিজয়নের সরকার। অন্য দিকে, ধসের কারণে রাস্তাঘাটের অবস্থা শোচনীয়। বেশির ভাগ জায়গাতে রাস্তা ধসে গিয়েছে। ফলে পুলিশ, প্রশাসন, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে। ভারতীয় সেনার হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে উদ্ধারের কাজে। তবে কত দিনে ধ্বংসস্তূপ থেকে সকলকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে তা এখনও অজানা। ভারী বৃষ্টি এবং প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকাজ।

গত কয়েক দিন ধরে ক্রমাগত ভারী বৃষ্টি হচ্ছে কেরলে। মনে করা হচ্ছে, এই ভারী বৃষ্টির কারণে মঙ্গলবার রাত ২টো থেকে ভোর ৪টের মধ্যে ওয়েনাড়ের মেপ্পাড়ি এলাকায় পর পর ধস নেমেছে। আর তার জেরে প্রায় কাদায় মিশে গিয়েছে গোটা এলাকা। ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কাদামাটিতে চাপা পড়েছেন বাসিন্দারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.