পানীয় জল আনতে দেড় কিলোমিটার দূরে হেঁটে যেতে হত স্ত্রী’কে। তাঁর ওপরে শরীর অসুস্থ থাকায় এই জল আনা ছিল আরও কষ্টকর। স্ত্রীর এই সমস্যা লাঘবে স্বামী এমন একটি কাজ করলেন, যা নজির গড়ল দেশে।
ঝাড়খণ্ডের চাড়া পাহন পাহাড় কেটে বানিয়ে ফেললেন কুয়ো। কোজডং গ্রামের মুরহু ব্লকের কুন্তী গ্রামে এঘটনা ঘটেছে। চাদা পাহানের এই কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে স্থানীয় লোকেরা ডাকছেন ঝাড়খণ্ডের ‘দশরথ মাঝি’ নামে। এই দশরথ মাঝি পাহাড় কেটে একটি রাস্তা তৈরি করেছিলেন।
চাড়া পাহন জানিয়েছেন, স্ত্রীকে জল আনতে বছরের পর বছর অনেক দূরে যেতে হত। একদিন তিনি পাহাড়ে ঘুরতে ঘুরতে একজায়গা থেকে জল বেরোতে দেখেন। তিনি মনে করেছিলেন, এর নীচে জল থাকতে পারে। তিনি পাথর কাটার প্রস্তুতি নেন। এই কুয়ো বানাতে তাঁর প্রায় ৬ মাস সময় লাগে। এই ৬ মাস ধরে চাদা একটি ছেনি ও হাতুড়ি দিয়ে প্রায় ২০ ফুট পাথর কাটেন। এরপর আসে জল।
বাড়ি অবধি পাইপ দিয়েছেন
শুধু কুয়ো খোঁড়া না। স্ত্রী-র যাতে জল আনতে কষ্ট না হয়, তাই চাড়া পাহন ওই কূপ থেকে একটা পাইপ নিজের বাড়ি অবধি নিয়ে আসেন। ফলে বিমা মোটরেই বাড়িতে চলে আসে জল। চাড়া পাহন যে শুধু নিজে এই পাইপের জল ব্যবহার করে তা না, এখন পুরো গ্রামের মানুষ এই পাইপলাইন থেকে জল ব্যবহার করে।
চাড়া পাহনের কুন্তী জেলা সদর থেকে ২৫ কিমি দূরে পাহাড়, বন ও পাথরের মাঝে অবস্থিত। স্বাধীনতার পর সাত দশক পেরিয়ে গেলেও এখানে বিদ্যুৎ এবং জল পৌঁছায়নি। এখানকার মানুষদের প্রায় দেড় কিলোমিটার দূর থেকে জল আনতে হয়। কিন্তু চাড়ার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে ঝামেলা বাড়ে। এখন তাদের পক্ষে দেড় কিলোমিটার হাঁটা সম্ভব ছিল না। আর তারপরেই এই অসাধ্য সাধন।
ঝাড়খণ্ডের ‘দশরথ মাঝি’
আসলে বিহারের দশরথ মাঝি আর ঝাড়খণ্ডের চাড়া পাহনের গল্পটা একই রকমের। দুজনের ক্ষেত্রেই স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পর তাঁর কষ্ট লাঘবে অসাধ্য সাধন করেছিলেন তাঁরা।