রান্নার গ্যাসের গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক তথ্যের জন্য আর লাইনে দাঁড়াতে হবে না, কী ভাবে সম্ভব?

ভর্তুকি পান এমন রান্নার গ্যাসের গ্রাহকদের আধারের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। তা করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন গ্রাহক থেকে ডিলার, সকলে। সমস্যা দূর করতে এ বার গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়ার সময় গ্রাহকদের বাড়ি বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের যন্ত্র নিয়ে যাবেন ডেলিভারি বয়। ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ডেলিভারি বয়ের কাছে থাকবে এই যন্ত্র। এর ফলে বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের জন্য গ্রাহকদের আর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হবে না। ডিলারদেরও চাপ কমবে।

দেশের এক তেল সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এলপিজি ডেলিভারি বয়েরা গ্যাস যখন বাড়ি বাড়ি দিতে যাবেন, তখন সঙ্গে রাখবেন এই বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের যন্ত্র। ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, ‘‘বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের পর ভর্তুকি তুলে নেওয়া হবে বা গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে কোনও তথ্য নেই। রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি পাওয়ার জন্য যে আধার কার্ড ব্যবহার করা হয়, শুধুমাত্র তা যাচাই করা হবে। গ্রাহকদের এ বিষয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হচ্ছে, তাঁরা যাতে বায়োমেট্রিক যাচাই করে নেন।’’

এর আগে তেল সংস্থাগুলি দাবি করেছিল ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই বায়োমেট্রিক সংগ্রহের কাজ শেষ করতে হবে। যদিও তেল সংস্থার ওই আধিকারিক এ রকম কোনও কথা মানতে চাননি। তিনি জানিয়েছেন, গ্রাহকদের এই বায়োমেট্রিক সংগ্রহের কাজ শেষ করার কোনও সময়সীমা নেই। তবে অবশ্যই সময়ের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় সুবিধাভোগীরা যাতে সুবিধা পান, সেটা দেখাই উদ্দেশ্য।

কেন্দ্র এই বায়োমেট্রিক সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়ার পর সমস্যায় পড়েছেন গ্রাহকেরা। দীর্ঘ সময় গ্যাসের দোকানে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে তাঁদের। প্রবীণ গ্রাহকেরা সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়ছেন। পাশাপাশি সমস্যায় পড়ছেন বিক্রেতারাও। তাঁদের একাংশের দাবি, তেল সংস্থাগুলির ‘সার্ভারে’ একসঙ্গে বিপুল চাপ পড়ায় প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে অনেক ক্ষেত্রেই সময় লাগছে। তার উপরে অধৈর্য এবং হয়রান গ্রাহকের ক্ষোভের মুখে পড়ছেন তাঁরা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ, চোখের মণি, মুখাবয়ব) সংগ্রহের বিষয়ে কিছু সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন ডিলারদের একাংশ। তাঁদের মতে, বায়োমেট্রিক সংগ্রহের বিষয়টি বেশির ভাগ ডেলিভারি বয়ের কাছে অজানা। সে ক্ষেত্রে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। নতুন যন্ত্রও কিনতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে এত গ্রাহকের তথ্য কী ভাবে যাচাই করা হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ডিস্ট্রিবিউশন সংস্থার আধিকারিকেরা। তাঁদের বক্তব্য, শহরে অনেক বিক্রেতারই মাথাপিছু গ্রাহক সংখ্যা ৩০,০০০-৩৫,০০০। গ্রামে অন্তত ১০,০০০-১৫,০০০। তেল সংস্থা বা সরকারের তরফে এ নিয়ে সচেতনতা বা প্রচার কর্মসূচিও করা হয়নি। তাই সত্যিই ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই কাজ সারতে হলে তা এক প্রকার অসম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.