বিতর্ক বাড়ছে সিআর৭-কে নিয়ে, ক্লাব-ছাড়া হয়েই কি বিশ্বকাপ ফুটবলে নামতে হবে রোনাল্ডোকে

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর একটি সাক্ষাৎকার, যা বাতিল করে দিতে পারে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে তাঁর চুক্তি। পর্তুগিজ ফুটবল তারকা তাঁর সাক্ষাৎকারে নিজের দল সম্পর্কে এমন কিছু কথা বলেছেন যা মেনে নিতে পারছেন না ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাটেড কোচ এবং কর্তারা। তাঁরা আলোচনা করছেন রোনাল্ডোকে কী শাস্তি দেওয়া যায়, তা নিয়ে।

রোনাল্ডো তাঁর দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি কোচকে সম্মান করেন না। স্বাভাবিক ভাবেই এর পর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কোচ এরিক টেন হ্যাগ ক্ষিপ্ত। তিনি কর্তাদের সঙ্গে এই ব্যাপারে কথাও বলেছেন বলে জানা গিয়েছে। ক্লাবের মনে হয়েছে যে, দলকে অপমান করা হয়েছে। উল্লেখ্য, অসুস্থতার জন্য ম্যাঞ্চেস্টারের হয়ে দু’টি ম্যাচে না খেললেও পর্তুগালের হয়ে অনুশীলনে নামেন রোনাল্ডো। এই ক্লাবের হয়ে যে তিনি খেলতে আগ্রহী নন তা স্পষ্ট হচ্ছে বার বার।

ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হতে বাকি মাত্র পাঁচ দিন। তার আগে রোনাল্ডো তাঁর ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার সম্পর্ক বলেন যে, তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। দ্বিতীয় বার ম্যাঞ্চেস্টারে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই ধরনের অভিযোগ মেনে নেওয়া ক্লাবের পক্ষে সম্ভব হয়নি। রোনাল্ডোর এক সময়ের সতীর্থ এবং ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন ফুটবলার রিও ফার্দিনান্দ বলেন, “রোনাল্ডো যা বলেছে তার থেকে ফিরে আসার কোনও জায়গা নেই। আমার মনে হয় না ক্লাব ওকে ফিরিয়ে নেবে। রোনাল্ডো ফিরে যেতে চায় বলেও মনে হয় না। এই সব কিছু করা হচ্ছে কারণ রোনাল্ডো ক্লাব থেকে বার হতে চায়। এই সাক্ষাৎকারের পর আমি রোনাল্ডোর পাশেই দাঁড়াবো। ক্লাবের উচিত ছিল রোনাল্ডোর সঙ্গে ভাল ভাবে কথা বলা। এই ঘটনার পর রোনাল্ডো ফিরে এসে ক্লাবে অনুশীলন করবে সেটা বোধ হয় হবে না।”

একটি সাক্ষাৎকারে ক্লাবের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন পর্তুগালের হয়ে সর্বাধিক গোল করা ফুটবলার। রোনাল্ডো বলেছেন, “আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। আমাকে নিশানা করা হচ্ছে। আমি এই ক্লাবে থাকি, সেটা অনেকে চায় না। শুধু এই বছর নয়, আগের বছরও তারা সেটাই চেয়েছিল।” কিন্তু কারা রয়েছেন সেই তালিকায়। কোচ এরিক টেন হ্যাগের নাম প্রকাশ্যে বলেছেন রোনাল্ডো। কিন্তু বাকি কারও নাম নেননি। বলেছেন, “শুধু কোচ নয়, আরও দু-তিন জন রয়েছে যারা আমাকে চায় না।”

টেন হ্যাগের সঙ্গে তাঁর বিবাদ মাঠেই দেখা গিয়েছে। টটেনহ্যাম হটস্পারের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই টানেল দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রোনাল্ডো। সেই কারণে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পরে অবশ্য দলে ফেরানো হয় রোনাল্ডোকে। কোচকে নিয়ে রোনাল্ডো বলেছেন, ‘‘যদি তুমি আমাকে সম্মান না করো, তা হলে আমিও তোমাকে সম্মান করব না। আগে ফুটবলারদের সম্মান করো। তা হলে তোমাকেও ফুটবলাররা সম্মান করবে।’’

ফার্দিনান্দ বলেন, “রোনাল্ডো এবং ম্যাঞ্চেস্টারের ভাল সময় শেষ। ওই পর্ব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ও ক্লাবকে এমন একটা জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে যে, আর ফিরে আসার জায়গা নেই। ক্লাবের কেউ যদি চায় রোনাল্ডোকে রাখতে তা হলে তাঁর পক্ষেও আর সেটা সম্ভব হবে না। সাক্ষাৎকারটা যদি ঘণ্টাখানেকের না হয়ে দু’মিনিটেরও হত এবং ও তাতে বলত যে, আমি কোচকে সম্মান করি না। শুধু সেই কারণেই ওকে বাদ দেওয়া হত।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.