সংঘর্ষের সময়েও পাক চরদের সঙ্গে যোগাযোগ! পহেলগাঁও কাণ্ডের সঙ্গে জ্যোতির পাকিস্তান যাওয়ার যোগসূত্র খুঁজছে পুলিশ

পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের আগে পাকিস্তানে ঘুরতে গিয়েছিলেন ভারতীয় সমাজমাধ্যম প্রভাবী জ্যোতি মলহোত্রা। ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘর্ষের সময়েও পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছে হরিয়ানা পুলিশ।

হিসার জেলার পুলিশ সুপার শশাঙ্ককুমার সবন্ত জানিয়েছেন, পহেলগাঁও কাণ্ড এবং জ্যোতির পাকিস্তান যাওয়ার মধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, থাকলে কী ধরনের যোগসূত্র, তা খুঁজে বের করা হচ্ছে। জ্যোতি মূলত বিভিন্ন ভ্রমণ সংক্রান্ত ভিডিয়ো পোস্ট করেন নিজের সমাজমাধ্যমের পাতায়। ঘটনাচক্রে, তাঁর সমাজমাধ্যমের পাতায় ২১ সপ্তাহ আগে কাশ্মীরের কিছু ভিডিয়োও পোস্ট করা হয়েছিল।

পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, জ্যোতি একা নন, পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে আরও বেশ কয়‌েকজন সমাজমাধ্যম প্রভাবীর যোগাযোগ ছিল বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা। যদিও কারা জড়িত, সে বিষয়ে কোনও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি পুলিশ। হিসারের পুলিশ সুপার জানান, জ্যোতিকে জেরা করে কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। জ্যোতি ছাড়া আর কে কে পাকিস্তানিদের কাছে তথ্যপাচার করতেন, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে অনুমান পুলিশের।

জ্যোতিকে মূলত কী কাজে পাকিস্তান ব্যবহার করতে চাইছিল, তার-ও একটি আভাস মিলেছে হিসারের পুলিশ সুপারের সাংবাদিক বৈঠকে। তাঁর মতে, ‘আধুনিক যুদ্ধ’ সবসময় সীমান্তে লড়া হয় না। সমাজমাধ্যম প্রভাবীদের ব্যবহার করে নিজেদের একপেশে গল্প তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়। পাকিস্তানি গুপ্তচরেরা সম্প্রতি নিজেদের কাজের জন্য সমাজমাধ্যম প্রভাবীদের ব্যবহার করার চেষ্টা শুরু করেছে। ‘শেয়ার’, ‘ভিউ’ এবং ‘লাইক’ পাওয়ার প্রলোভনে এই ফাঁদে পড়ে যান সমাজমাধ্যম প্রভাবীরা। এ ক্ষেত্রেও তেমনই চেষ্টা চলছিল এবং ভারতের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছিল।

হরিয়ানার ধৃত সমাজমাধ্যম প্রভাবী জ্যোতি একাধিক বার পাকিস্তান ঘুরতে গিয়েছিলেন। চিনেও গিয়েছিলেন এক বার। জ্যোতির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের হিসাব, তিনি কোথায় কোথায় গিয়েছেন, সেই সব তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রেখেই কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জ্যোতির ঘটনা থেকে বাকিদেরও সতর্ক করে দিয়েছে হরিয়ানার পুলিশ। পুলিশ সুপার বলেন, “অনেকে বুঝতেও পারেন না কখন তাঁরা ভুল পথে চালিত হয়ে যাচ্ছেন। তাঁর পেশা কী, তাঁর লক্ষ্য কী— সেই সব ভুলে যান। কেউ সেটিকে কী ভাবে অপব্যবহার করছেন, তা-ও বুঝতে পারেন না। অনেক সময় ছোট ছোট তথ্য, যা আপনি একেবারে সাধারণ বিষয় মনে করছেন, সেটিই উল্টোদিকের মানুষের কাছে একটি মারাত্মক তথ্য হয়ে উঠতে পারে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.