ইদ, রামনবমীকে কেন্দ্র করে অশান্তির চক্রান্ত! ‘নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে’ সতর্ক করল পুলিশ, কঠোর ব্যবস্থারও হুঁশিয়ারি

আগামী সপ্তাহেই রাজ্যে দু’টি ধর্মীয় উৎসব রয়েছে। অথচ তার আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে গন্ডগোল বাধানোর ‘ষড়যন্ত্র’। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি বাধানোর চেষ্টাও চলছে। উৎসবের প্রাক্কালে এমনটা জানিয়ে রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার বার্তা দিল রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ।

শনিবার ভবানী ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম জানান, গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে শনিবারই হাওড়ার শ্যামপুর থানায় দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলিও বেশ গুরুতর। পুলিশের দাবি, অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছিলেন ওই দুই ব্যক্তি। মামলা দায়ের হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৯৬ (১) (বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা তৈরি করা), ২৯৯ (এমন কোনও দুরভিসন্ধিমূলক কাজ করা যাতে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে), ৩৫৩ (১) ও (২) (সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে উস্কানি দেওয়া এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা, পারস্পরিক অবিশ্বাস, শত্রুতা ও হিংসার বাতাবরণ তৈরি করা) এবং ৬১(২) (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায়। এ বিষয়ে জাভেদ বলেন, ‘‘আগামী ১০ দিন রাজ্যের ধর্মীয় ক্যালেন্ডারে খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। ইদ, রামনবমী, বাসন্তী পুজো-সহ নানা ধর্মীয় উৎসব রয়েছে। তাই আমরা এই ক’দিন সকলকে সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছি। সকলে সচেতন থাকুন। কোনও রকম প্ররোচনায় পা দেবেন না। কাউকে কোনও রকম গন্ডগোল বাধাতে দেখলেই আমাদের জানান।’’

রাজ্য পুলিশের আবেদন, উৎসবের আবহে কেউ যেন কোনও রকম গন্ডগোল, অশান্তি না-বাধাতে পারেন। রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘গোপন সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে যে কোনও মহল থেকে এমন কিছু পরিকল্পনা করা হচ্ছে যাতে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এবং সম্প্রীতি বিঘ্নিত হয়। এমন কিছু পোস্টার বা প্ল্যাকার্ড রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে লাগানোর পরিকল্পনার কথা জানা গিয়েছে। রয়েছে ধর্মীয় সম্পত্তি নষ্টের পরিকল্পনাও। এর পরেই পুলিশের সমস্ত বিভাগকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে গোয়েন্দা বিভাগও।’’ পাশাপাশি জাভেদ বলেন, ‘‘পুলিশ এ নিয়ে সচেতন রয়েছেই, কিন্তু এই মূহূর্তে শান্তিরক্ষায় সব চেয়ে বড় ভূমিকা রয়েছে জনতার। তাই তাঁরা যেন সচেতন থাকেন। সমাজমাধ্যমে কোনও ভুয়ো গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন। কেউ কোনও রকম উস্কানিমূলক প্ররোচনায় পা দেবেন না।’’

একই মর্মে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আবেদন জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মাও। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৈরি রয়েছে কলকাতা পুলিশও। যাঁরা কোনও রকম অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মনোজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.