গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের পর ফ্রান্সের রাফাল যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে ভুয়ো প্রচার চালিয়েছিল চিন। আমেরিকার একটি রিপোর্টে সম্প্রতি এমনটাই দাবি করা হয়েছে। আমেরিকা-চিন অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশনের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিজেদের জে-৩৫ যুদ্ধবিমানের সাফল্য প্রচার করতেই ফ্রান্সের যুদ্ধবিমানটি নিয়ে ভুয়ো খবর রটানো হচ্ছিল। এর জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তাও নেওয়া হয়েছে।
ফ্রান্সে তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান ভারত ব্যবহার করে থাকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেনা সংঘাতেও ওই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছিল। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের একাধিক যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। এমনকি, রাফাল ধ্বংস করা হয়েছে বলেও বার বার দাবি করেছে তারা। ভারতীয় সেনার তিন বাহিনীর প্রধান অনিল চৌহান একটি সাক্ষাৎকারে মেনে নিয়েছিলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের সময়ে ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু কতগুলি, বা আদৌ তা রাফাল কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
মার্কিন রিপোর্ট অনুযায়ী, রাফালের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর জন্য চিন সমাজমাধ্যমে কতগুলি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। তার মাধ্যমে এআই সহায়তায় তৈরি একাধিক ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। দেখানো হয়, চিনের অস্ত্রে ফরাসি যুদ্ধবিমান গুঁড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে সবই ‘ভুয়ো’, দাবি আমেরিকার রিপোর্টে।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পরেই ফ্রান্সের তৈরি রাফালের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল নানা মহলে। ফ্রান্স দাবি করে, তাদের যুদ্ধবিমান নিখুঁত। রাফালের বিরুদ্ধে ভুয়ো প্রচার অভিযান চলছে এবং ফরাসি আধিকারিকেরা তার মোকাবিলার চেষ্টা করছেন, দাবি করেছিল সে দেশের সরকার। সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস ফরাসি গোয়েন্দা সূত্র উল্লেখ করে একটি রিপোর্টে জানিয়েছিল, রাফালের বিক্রি কমানোর জন্য চিনের মদতে এই ধরনের প্রচার চলছে। এ বার মার্কিন রিপোর্টও একই দাবি জানাল।
রাফাল নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের একটি চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। ভারত-পাক সংঘাতের পর সেই চুক্তি স্থগিত হয়ে যায়। রাফালের কার্যক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান হয়ে ওঠে ইন্দোনেশিয়া সরকার। মার্কিন রিপোর্টে দাবি, এতেও চিনের হস্তক্ষেপ রয়েছে। পাকিস্তান চিনের তৈরি জে-৩৫ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে। ২০২৫ সালের জুন মাসে পাকিস্তানের কাছে আরও ৪০টি জে-৩৫ যুদ্ধবিমান, কেজে-৫০০ বিমান এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে চিন। প্রায় একইসঙ্গে পাকিস্তান প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দও বৃদ্ধি করেছে।

