ভারত মহাসাগরে চিন তৎপরতা বাড়াচ্ছে, কমান্ডারদের সম্মেলনে নৌসেনা প্রধানের সাত দাওয়াই

ভারত মহাসাগরে চিনা নৌবাহিনীর তৎপরতা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের সমুদ্রসীমা এবং আন্তর্জাতিক জলসীমায় নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্য পরিস্থিতির উপরে ভারতকে নিবিড় ভাবে নজরদারি চালিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠী। পাশাপাশি মঙ্গলবার নৌসেনা কমান্ডারদের অধিবেশনে সম্ভাব্য চিনা হামলার মোকাবিলার জন্য সাত দফা প্রস্তুতির নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

কর্নাটকের কারওয়ার নৌঘাঁটিতে সোমবার থেকে নৌসেনার কমান্ডারস্তরের তিন দিনের সম্মেলন শুরু হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, ওই সম্মেলনে অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠী নিয়মিত যুদ্ধের অনুশীলন, বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি, নৌবহরের রক্ষণাবেক্ষণ, নতুন ও উন্নততর প্রযুক্তির ব্যবহার, নৌবহর পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ অক্ষুন্ন রাখা, নৌসেনাকর্মীদের উন্নয়ন এবং বায়ুসেনার সঙ্গে সমন্বয় বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

ওয়াশিংটন-বেজিং শুল্কযুদ্ধের আবহে ভারত মহাসাগরে চিনা নৌবাহিনীর তৎপরতা নিয়ে নৌসেনা প্রধানের এই মন্তব্যকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন অনেকেই। ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি পূর্ব লাদাখের প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-কে শান্তি ফেরানোর যৌথ মেকানিজ়ম নিয়ে বেজিংয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও হয়েছে। প্রসঙ্গত, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনকে চাপে রাখার জন্য কয়েক বছর আগেই আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‘কোয়াড’ (চতুর্দেশীয় অক্ষ)-এ যোগ দিয়েছে ভারত। সম্প্রতি, দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের আধিপত্য রুখতে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপিন্সকে নিয়ে গঠিত আমেরিকার নেতৃত্বাধীন জোট ‘স্কোয়াড’-এর বৈঠকেও আমন্ত্রণ পেয়েছে ভারত।

২০২৩ সালে নৌসেনা কমান্ডারদের সম্মেলনে তৎকালীন প্রধান অ্যাডমিরাল হরি কুমারও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যে কোনও সময়েই তিন থেকে ছ’টি চিনা যুদ্ধজাহাজ ভারত মহাসাগর অঞ্চলে দেখা যাচ্ছে। তা ছাড়া, নিয়মিত যাতায়াত করছে গবেষণা জাহাজ।’’ ওই গবেষণা জাহাজগুলি আদতে চিনা ‘পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি’র বলেও সন্দেহ নৌসেনার। মঙ্গলবার কারওয়ারের সম্মেলনে অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠী ভারতীয় নৌসেনার অপারেশনাল ডেটা ফ্রেমওয়ার্ক, মহাকাশযুদ্ধে আন্তঃবাহিনী সমন্বয় সংক্রান্ত পরিকল্পনা, নৌ ও বিমান চলাচল সুরক্ষা এবং নৌসেনার কর্মী ও আধিকারিকদের অবসর এবং জীবনযাত্রার উপর ‘স্টপ রেফারেন্স গাইড’ প্রকাশও করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.